ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় বোরো ধানের ফলন বাড়ানোসহ একযোগে কর্তন করার লক্ষ্যে সমলয় চাষাবাদের জন্য ট্রে পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করছে কৃষকরা। ভালো মানের চারা উৎপাদনের জন্য উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এই প্রথম ট্রে-তে বীজ বপন করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চান্দড়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় দেখা গেছে এ বীজতলা তৈরির নতুন এক ভিন্ন চিত্র। এসময় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাও উপস্থিত থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছিলেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৫০ একর জমিতে সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনার আওতায় বোরো ধানের সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে প্রচলিত রীতিতে সাধারণভাবে বীজতলা তৈরি না করে কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রে-তে মেশিন দিয়ে বপণ করছে উন্নত জাতের ব্রি-৮৯ ধানের বীজ। এতে ২০-২৫ দিনের মধ্যে চারা গজাবে।
রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে শুধু সামান্য পরিমাণে জৈব সার ব্যবহারে খরচ হচ্ছে না। এর ফলে বীজতলা থেকে ধানের চারা উত্তোলন, চারা লাগানো, ফসল মাড়াই ও সবই এক সময়ে একযোগে করা যাবে। এ জাতের ধানের জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন। চান্দড়া গ্রামের কৃষক সাদ্দাম হোসেন জানায়, এ পদ্ধতিতে আগে কখনো দেখিনি। প্রথমবারের মতো কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় সমলয় ট্রে পদ্ধতিতে বোরো চাষাবাদ করছি। আশা করি ভালো ফলন হবে। এ বছর ফলন ভালো হলে কৃষকদের আগ্রহও বাড়বে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ও রাকিবুল ইসলাম জানান, সনাতন পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে ধান চাষে ফলন বাড়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে বীজ বপন করতে ৩: ২ অনুপাতে মাটি ও গোবরের মিশ্রণ দিয়ে। বীজতলা তৈরির তিন দিনের মধ্যে অঙ্কুর বের হয়। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা উৎপাদন করে রোপণ করা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে কৃষক ভালো মানের চারা উৎপাদন করে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জমিতে ফসল ফলাতে পারেন।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বার্তা বাজার’কে বলেন, জনসংখ্যার খাদ্যচাহিদা মেটানোর জন্য ধানের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন। সমলয় পদ্ধতিতে চাষাবাদের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারসহ ধানের উৎপাদন খরচ কমানো ও সময় সাশ্রয় হবে। এই অঞ্চলে বোরো আবাদে কৃষকের আগ্রহ আরও বেড়ে যাবে বলে, আশা করেন তিনি।
বার্তাবাজার/এস এইচ