গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেছেন, দিল্লির তাবেদারী ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশের মনুষকে সাহসী করার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিষ্ট খুনি হাসিনার পতন ঘটানো হয়েছে। আর এই কাজটি করেছিল গণঅধিকার পরিষদ।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারে সরকারকে আমরা সহায়তা করছি। আমাদের অগ্রযাত্রা থামার জন্য নয়। দেশের মঙ্গলে যেমন আমরা সোচ্চার, তেমনি ভারতের আগ্রাসন রুখতে গণঅধিকার পরিষদ সর্বদা প্রস্তুত। রাশেদ খাঁন শুক্রবার বিকালে ঝিনাইদহ জেলা শিশু একাডেমী মিলনায়তনে “দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, হানাহানিমুক্ত সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয়” শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। গণঅধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম আশিকুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের ঝিনাইদহ জেলার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল ও রিহান উদ্দীন রায়হান। সভা পরিচালনা করেন ছাত্রঅধিকার পরিষদের নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন।

রাশেদ খাঁন বলেন, যারা ভারতে বসে নাটাই ঘুরায়, বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে নাক গলায়, দিল্লিতে বসে বাংলাদেশে কে ক্ষমতায় আসবে কি আসবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় তাদের ষড়যন্ত্র আর কুট পরিকল্পনা রুখে দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মোদির আধিপত্যবাদ বিরোধী আন্দোলন আমরাই করেছিলাম। দিল্লির কসাই মোদীর হাতে মুসলমানদের রক্ত লেগে আছে। তাকে প্রতিহত করতে সেদিন গণঅধিকার পরিষদ মাঠে নেমেছিল এবং জেল জুলুমের শিকার হয়েছিল। রাশেদ খাঁন বলেন, খুনি হাসিনা ও তার দলকে বিচারের মুখোমুখি না করা পর্যন্ত আওয়ামীলীগকে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। শুধু আওয়ামীলীগই নয়, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিষ্ট হাসিনার আশির্বাদপুষ্ট ১৪ দলের কোন নেতাকর্মীকে ডাদি, মামি ও স্বতন্ত্র পদে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। খুনি হাসিনাকে গনহত্যা ও গনতন্ত্র হত্যার দায়ে ভারত থেকে ফিরিয়ে তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝোলাতে হবে। আর সরকার যদি হাসিনার দলের সঙ্গে সমঝোতা করে তাদের নির্বাচনের মাঠে নামায় তবে সরকারের বিরুদ্ধেও মাঠে নামার হুসিয়ারী দেন তিনি। তিনি বলেন, হাসিনা তার দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে ঘন ঘন অডিও ফাঁসের নাটক করছেন। এই নাটক বন্ধ করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমে পতিত স্বৈরাচার হাসিনার অডিও প্রচার বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।

রাশেদ খাঁন বলেন, কেউ স্বীকার না করলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জুলাই গনঅভ্যুথানে গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা পালন করেছিলেন। তিনি সর্বশক্তি দিয়ে ছাত্রদের সামাজিক আন্দোলনকে রাজনীতিকরণ করে হাসিনা পতন আন্দোলন ত্বরান্বিত করেন। তারেক রহমান একটি ইতিবাচক চিন্তার জায়গা থেকে আমাকে (রাশেদ খাঁন) সহায়তা করতে ঝিনাইদহ বিএনপি নেতাদের চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা হাইকমান্ডের এই চিঠির মর্মার্থ বুঝতে ভুল করে আমাকে অসহযোগিতা করে যাচ্ছেন। ঝিনাইদহ বিএনপি হাইকমান্ডের নির্দেশ মানছেন না। কার্যত তারা তারেক রহমানকেই মানেন না। তাহলে তারা কিসের দল করেন ? তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমি এমপি-মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করি না। আমরা এমপি মন্ত্রী তৈরী করি, এমপি-মন্ত্রী বানায়। গণঅধিকার পরিষদ ছাত্র আন্দোলনের কারখানা। তারা ক্ষমতায় যেতে রাজনীতি করে না, পরিবর্তনের জন্য আমরা রাজনীতি করি। রাশেদ খাঁন বলেন, আমাকে সহায়তা করতে তারেক রহমানের এই চিঠি নিয়ে যারা নোংরা খেলায় মেতেছেন তার ছাত্র জনতার বিপ্লবে বিশ্বাস করে না।

এমনটি করলে বিপ্লব ব্যার্থ হবে। ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান ঘটবে। তখন কেউ রেহাই পাবেন না। এ থেকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। রাশেদ খাঁন অভিযোগ করে বলেন, ঝিনাইদহে দখলবাজী, চাঁদাবাজী ও টেন্ডারবাজীসহ নানা অপরাধ চলছে। আমরা তো এসব করার জন্য বিপ্লব করিনি। এসব কর্মকান্ড চলতে দেওয়া হবে না। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লেখুন। কেউ হুমকী দিলে আমি রাশেদ খাঁন আপনাদের জন্য বুক পেতে দেব।