বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) প্রশাসকের দায়িত্বভার আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহন করলেন ডাক-টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মুহাম্মদ মেহেদী হাসান।
বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকালে নবনিযুক্ত প্রশাসক বানিজ্য মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক যোগদানের পর বিকাল তিনটায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ বেসিস কার্যালয়ে পৌছালে বেসিস সচিব জনাব হাশিম আহমেদ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে তাকে স্বাগত জানান। এসময় সেখানে বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদের সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা কাউন্সিলের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মো: ইমরুল কায়েস পরাগ, বেসিস সংস্কার পরিষদের মুখপাত্র ফৌজিয়া নিগার সুলতানা সহ সাধারণ বেসিস মেম্বারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে নবযিযুক্ত প্রশাসক বেসিস বোর্ডরুমে এক সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় ড. মেহেদী তার উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে সকল মেম্বারদের আন্তরিক সহযোগিতা ও সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য চান। এসময় তিনি অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সদস্যদের পক্ষ হতেও সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করা হয়। বেসিসের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন উল্লেখ করে বেসিস সেক্রেটারি হাশিম আহমেদ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি মেম্বারবান্ধব সংগঠন হিসাবে বেসিস কে গড়ে তুলতে নতুন প্রশাসককে আহবান জানান।
এর আগে বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) প্রশাসক হিসেবে তিনি নিয়োগ পান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহর সই করা এক অফিস আদেশে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়, যেহেতু বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি নিবন্ধিত বাণিজ্য সংগঠন, সেহেতু বেসিস এর পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ গত ১৭ অক্টোবর এবং ১৯ অক্টোবর সহ-সভাপতি (অর্থ) ইকবাল আহমেদ ফখরুল হাসান ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন মর্মে জানা গেলেও তার পদত্যাগপত্রটি মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন এর নিকট প্রেরণ করা হয়নি এবং পরবর্তীতে বেসিস এর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলেও পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ গঠন প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ।
এতে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আইসিটি উদ্যোক্তা কাউন্সিল ও বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলী পরিষদ এবং সাধারণ সদস্যদের প্রতিনিধিবর্গ হতে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে নোটিশ জারি করে গত ১৮ নভেম্বর শুনানি করা হলেও পূর্বের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপস্থিত হননি ও তারপক্ষে কোনো জবাব প্রদান করেননি এবং পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ সন্তোষজনক জবাব উপস্থাপন করতে পারেননি। এ কারণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের চলমান অস্থিরতা ও অসন্তোষের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে এবং এ পরিস্থিতিতে বেসিস এর পরিচালনা পর্ষদ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।
তাই বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সমন্বয়হীনতার কারণে বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ১৭(১) অনুযায়ী-ব্যবসা, শিল্প, বাণিজ্য ও সেবাখাতের স্বার্থে সংগঠনটির সার্বিক কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর সকল কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের অসন্তোষ ও চলমান অস্থিরতা দূরীকরণের লক্ষ্যে বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২, বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা, ১৯৯৪, সংগঠনের সংঘস্মারক ও সংঘবিধি অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া আবশ্যক।
আর তাই বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ১৭ ধারা মোতাবেক সংগঠনটির পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ বাতিলপূর্বক সরকারের অনুমোদনক্রমে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসানকে ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)’ এর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হলো। তিনি ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে এ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন।