ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত ২৮ নভেম্বর আবু রায়হান অর্ণব নামে এক সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। এসময় তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে কুপিয়ে আহত করে আফতাবনগর এলাকায় ফেলে রেখে যায় তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে পথচারীদের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সাংবাদিক অর্ণব চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে সাংবাদিক আবু রায়হান অর্ণবকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে আহতের ঘটনায় পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পুলিশ কাউকে আটক করতে না পারায় উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন গন অধিকার পরিষদ এর সদস্য সচিব ফারুক হাসান ও যুগ্ম আহবায়ক মোঃ তারেক রহমান ও ঢাকা সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।
আজ ৩ ডিসেম্বর রোজ মঙ্গলবার বেলা ১২ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই প্রতিবাদ জানান তারা
এসময় ফারুক হাসান বলেন, সাংবাদিক অর্নব সবসময় প্রতিবাদী এবং ২৪ এর আন্দলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার খুনি হাসিনার রেখে যাওয়া দোসররা তার উপর উপর চড়াও হয়ে মেরে ফেলার জন্য তুলে নিয়ে কুপিয়ে জখম করে আমরা গন অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং প্রশাসনের ভাইদের বলবো অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবী জানান।
গন অধিকার পরিষদ যুগ্ম আহবায়ক মোঃ তারেক রহমান বলেন, থানার পুলিশ ভাইয়েরা মামলা নিতে চায়না খুনি হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনীরা এখনও নি
র্বিচারে ঘুরে বেরায় কিন্তু দেখার কেউ নাই, আজ আমার সাংবাদিক ভাইকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে কাল আপনাকে আমাকেও করতে পারে তাই আমি দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবী জানাচ্ছি।
এসব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিষ্ট ফোরাম(আইজেএফ) নেতা রফিকুল ইসলাম কচি, অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ(বসকো’র) মহাসচিব ফয়সাল হাওলাদার, পুরান ঢাকা সাংবাদিক ফোরামের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক জোট এর সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য আকাশ মনি,সহ বিভিন্ন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্তিত ছিলেন।
আহত সাংবাদিক আবু রায়হান অর্ণব অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডিকে নিউজের সম্পাদক একটি বার্তা সংস্থার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে ঢাকায় কর্মরত আছেন। তিনি শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভা এলাকার মাস্টার রহমতউল্লাহ সিকদারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, পেশাগত কাজ শেষে সাংবাদিক আবু রায়হান অর্ণব বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দোয়েল চত্ত্বর দিয়ে শিক্ষা ভবন আসার পথে মাইক্রোবাস করে মুখোশধারী কিছু অজ্ঞাত সন্ত্রাসী তাকে জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে গাড়ীতে তুলে নিয়ে যায়। এরপর চোখ বেঁধে মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি গাড়ী থেকে নামার জন্য ধস্তাধস্তি করলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারাত্মক জখম করে রাজধানীর বাড্ডা থানার আফতাবনগর এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পরে রিকশাচালক ও পথচারীদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী আহত সাংবাদিক অর্নব বলেন, পেশাগত কাজ শেষ করে বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে দোয়েল চত্ত্বর থেকে শিক্ষা ভবন আসার পথে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে মুখোশধারী কিছু অজ্ঞাত সন্ত্রাসী আমাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর চোখ বেঁধে মারধর করে। এরপর গাড়ি থেকে নামালে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারাত্মক জখম করে। আমার ডান হাতে প্রায় ২১ টি সেলাই দিতে হয়েছে এবং কোপ ঠেকাতে গিয়ে বাম হাতও জখম হয়েছে। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে একজন রিকশাচালক আমাকে উদ্ধার করেন। তার মাধ্যমে জানতে পারি আমাকে আফতাবনগরে ফেলে রেখে গিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় আমি থানায় একটি অভিযোগ করেছি। আশা করি সঠিক বিচার পাবো। তবে তিনদিন পার হলেও পুলিশ এখনো কাউকে আটক করতে পারে নি। আমি চাই তদন্ত করে পুলিশ জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুক।
এবিষয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাইফুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে বিষয়টি তদন্ত করছি। ভিকটিম চিকিৎসা নিচ্ছে তার সাথে যোগাযোগ করছি। সুস্থ হয়ে আসুক ‘এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।
এঘটনায় ঢাকা সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন।