ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশেই হেলিপোর্ট নামে পরিচিত প্রায় এক একর জমি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। যা কিছুদিন আগেও ছিল ঝোপঝাড় আর ময়লার ভাগাড়। দেখে মনে হতো কোন জঙ্গলময় একটি স্থান। সন্ধ্যা নামলেই শোনা যেত শেয়ালের ডাক। অনেকসময় বসতো মাদকাসেবীদের আড্ডা। চলতো অসামাজিক কার্যকলাপ। এখন সেই জায়গা জুড়ে উপজেলা প্রশাসন গড়ে তুলেছে দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্র।
রোববার বিকালে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করে জনসাধারণের জন্য বিনোদন কেন্দ্রটি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমীন ইয়াছমীন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিনের ভাগাড়-ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে সেখানে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবেশের জন্য তৈরী করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। হেলিপোর্টের সুবিশাল জায়গার চারিদিকে ইটের সলিং দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। এরপর ভিতরের জায়গায় শিশুদের জন্য স্টিলের দোলনা, স্লিপার, আপ স্ট্যান্ড, ঢেকিসহ বিভিন্ন প্রকার রাইডার দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেইসঙ্গে বসানো হয়েছে বেশকিছু বেঞ্চ। রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকার সৌন্দর্যবর্ধন বৃক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে টিআর প্রকল্পের বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পায় উপজেলা প্রশাসন। এরমধ্যে ৭ লাখ টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে বিনোদন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের শুরুতে বিনোদন কেন্দ্রের কিছু কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু বিভিন্ন নির্বাচন, সরকার পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজ সমাপ্ত করতে বিলম্ব হয়। গত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি বিনোদন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এরইমধ্যে নভেম্বরে বিনোদন কেন্দ্রের কাজ শেষ হয়।
সহপাঠীদের সঙ্গে বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা আলফাডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, বিদ্যালয়ের ছুটি শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে এসে অনেক ভালো লেগেছে। এখানে খেলাধুলার অনেককিছু আছে। বুড়াইচ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব পান্নু মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জায়গাটি জঙ্গলের মতো ছিল। সদিচ্ছা থাকলে পরিত্যক্ত একটি জায়গাকেও যে চমৎকার কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব, এই বিনোদন কেন্দ্র এর অন্যতম উদাহরণ। জানতে চাইলে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমীন ইয়াছমীন বার্তা বাজার’কে জানান, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বিনোদনের জন্য তেমন কোন ব্যবস্থা ছিল না। এলাকার মানুষের সুস্থ বিনোদনের পাশাপাশি শিশু-কিশোররা যাতে সুস্থ মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারে, এটাই এই বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য। এটি নিয়মিত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বার্তাবাজার/এসএইচ