কক্সবাজারের টেকনাফে ৭ম শ্রেণীর এক শিশু শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে গ্রেফতারের অভিযোগ উঠেছে টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গিয়াস উদ্দীনের বিরুদ্ধে। আদালত ওই শিশু শিক্ষার্থীর জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
ভোক্তভোগী শিক্ষার্থী তাউসিফুল করিম রাফি (১৩) উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান (২) রেজাউল করিমের ছেলে ও হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় শিশুটির পিতা রেজাউল করিমকেও আসামী করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে হ্নীলা দরগাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোরে হ্নীলা দরগাপাড়া এলাকার প্রবাসী নুরুল আমিনের বাড়িতে টেকনাফ থানার ওসি গিয়াস উদ্দীনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে একটি অস্ত্র উদ্ধার করেছে বলে জানাযায়। অস্ত্র উদ্ধারের পর স্থানীয় মেম্বার হিসেবে রেজাউল করিমের বাড়িতে রেজাউল করিমকে খোঁজতে যায় পুলিশ। রেজাউল করিমকে না পেয়ে তার ৭ম শ্রেণীর পড়ুয়া ছেলে তাউসিফুল করিম রাফিকে (১৩) ঘুম থেকে তুলে নুরুল আমিনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পূর্বে উদ্ধারকৃত অস্ত্র দিয়ে তাকে ফাঁসিয়ে দেয়। ওই সময় রাফিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অস্ত্রটি রাফির কাছ থেকে উদ্ধার করেছে বলে একটি প্রাথমিক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই মামলায় রাফিকে আদলতে প্রেরন করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। যার টেকনাফ থানার (মামলানং- ৮০/ ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ইং)
তিনি আরো বলেন বলেন, প্রবাসী নুরুল আমিনের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পরেও তার স্ত্রী সুফাইদাকে আসামী না করে উল্টো মামলার সাক্ষী করা হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি। এদিকে, অস্ত্রটি কখন কিভাবে উদ্ধার করা হয়েছে বিষয়টি নিয়ে নুরুল আমিনের স্ত্রী সুফাইদার গোপনে ধারণকৃত একটি ভিডিও থেকে তা পরিষ্কার হওয়া গেছে। ভিডিওতে সুফাইদা বলেন, সুফাইদার বাড়ির শয়ন কক্ষের স্টিলের আলমারীতে কাপড়ের ভাঁজের ভেতর থেকে পুলিশ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে।
অপরদিকে, মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২৬ নভেম্বর ভোর ৪টার দিকে টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ হ্নীলা ইউনিয়নের দরগাহ পাড়ার নুরুল আমিনের বাড়ির সামনে রাস্তার উপর অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টেরপেয়ে দুই জন ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা কালে তাউসিফুল করিম রাফিকে আটক করে পুলিশ। এসময় তার হাতে থাকা নীল রংয়ের শপিং ব্যাগের ভিতর হতে একটি কালো রংয়ের বিদেশী পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ও ৪০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। মামলার অপর সাক্ষী স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা জামাল হোসেন বলেন, অস্ত্র কোথায় কিভাবে পেয়েছে আমি দেখি নাই। আমাকে মসজিদে যাওয়ার পথে ওসি গিয়াস উদ্দীন নিজে নুরুল আমিনের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। ভেতরে গিয়ে দেখি রাফি, সুফাইদা ও বেশ কয়েক জন পুলিশ সদস্যের সামনে একটি পিস্তল ও কয়েকটি গুলি ঘরের মেঝেতে এলোমেলো অবস্থায় রাখা ছিলো।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গিয়াস উদ্দীন বলেন- কারো সাথে আমার শত্রুতা নেই। অস্ত্র যার হাতে পেয়েছি (রাফি) তার নিজের বক্তব্য প্রাথমিক জবানবন্দি হিসেবে ভিডিও আকারে রেকর্ড করা আছে। এই বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলাপুলিশ।
বার্তাবাজার/এসএইচ