কয়লা সংকটে এক মাসেরও বেশী বন্ধ থাকার পর কক্সবাজারের মহেশখালীতে অবস্থিত মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট ১ ডিসেম্বর থেকে পুনরায় উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) ৭০ হাজার টন কয়লা বোঝাই একটি জাহাজ ইন্দোনেশিয়া থেকে মাতারবাড়ী বন্দরে ভিড়েছে। ১ ডিসেম্বরের আগেই কয়লা খালাস হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, উৎপাদন শুরু হলে পূর্বের ন্যায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা এটি কয়লার প্রথম চালান। বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, চুক্তি অনুযায়ী জাপানের সুমিতমো করপোরেশন সম্পূর্ণ আমদানি নির্ভর এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সর্বরাহ করতো। তারা সর্বমোট ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা সর্বরাহ দেয়। সর্বশেষ গত আগষ্ট মাসে সর্বরাহকৃত কয়লার মজুদ পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়। ফলে ৩১ অক্টোবর থেকে কয়লা সংকটের কারণে এই বিদ্যুৎটি কেন্দ্রের দুই ইউনিট সম্পুর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।

প্রকল্পের প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন মজুমদার ‘বার্তা বাজার’কে জানান, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড তিন বছর মেয়াদে কয়লা সরবরাহের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। সেই সুযোগে সাবেক প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম একটি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দিতে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়ায় ১০ মাস দেরি করেন। ওই অনিয়মের অভিযোগ তুলে অপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর জুলাই মাসে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেই আদেশটি পরে উচ্চ আদালতে স্থগিত করলে দীর্ঘমেয়াদে কয়লা আমদানি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কয়লা আমদানিতে সময় লেগে যায় নভেম্বর পর্যন্ত।

প্রসঙ্গত, অনিয়ম-দুর্নীতি ও মামলার গ্যাড়াকলে জর্জরিত ঋণনির্ভর এ মেগা প্রকল্পটি নির্মানে ব্যয় হয়েছিলো ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। দুইটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাই ও আরেকটি ইউনিট ডিসেম্বরে চালু হয়।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ