সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নুর ইসলাম রবি’র অনিয়ম দুর্নীতির গ্যাড়াকল থেকে রেহাই পাইনি মসজিদ এমনই অভিযোগ উঠেছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দাদার সুত্রে সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি পাই রবি। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বিগত সরকারের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার আপন দুই ভাই হাসান ও সাজু (মাস্টার রোলে) চাকরি দিয়েছে এই রবি।

সূত্র জানায়, মাস্টারমাইন্ড রবি’র আপন ভাই সহ কয়েকজন ঠিকাদার ম্যানেজ করে গড়ে তুলেছে সেভেন সিস্টার্স নামের বিশাল সিন্ডিকেট। সেই থেকে টেন্ডারবাজিতে তার জুড়ি মেলাভার। নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অফিস কে জিম্মি করে ওটিএম টেন্ডার (ই-ভ্যালুয়েশন) সিন্ডিকেটের লাইসেন্স কাজ পাইয়ে বড় অংকের কমিশনের অভিযোগ অহরহ। স্থানীয় প্রভাব ও বিগত সরকারের কর্মী রবি, সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগের দায়িত্বে যে অফিসার আসে, তাকে ধরা দিতে হয় রবিকলে। এই সিন্ডিকেট প্রয়োজনে বড় বড় লাইসেন্স ভাড়া করে টেন্ডারবাজি করে আসছে দীর্ঘদিন । সূত্র আরো জানায়, নামে বেনামে কোটি কোটি টাকা ও সম্পদের মালিক বনে যাওয়া রবি সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগের একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। তার সাথে ঠিকাদারের সখ্যতা, গোপনে রেট কোড বিতরণসহ অফিসের গোপন তথ্য সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। কম্পিউটার অপারেটর হয়েও অফিসের অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিত আছে তার। সে কাজের রেট কোড পছন্দের ঠিকাদারকে সরবরাহ করে বলে জানা গেছে।

এছাড়া নুর ইসলাম রবি’র অফিসে চাকরির প্রভাবে সড়কের খাস জমি দখল করে সড়কের জায়গায় পাকা দোকান নির্মাণ করেছে।সেসব দোকান পরিচালনার দায়িত্বে আছে তার বাবা। এই অর্থলোভী হাত থেকে রেহাই পায়নি মসজিদও। কুশখালী দারুস সালাম জামে মসজিদের পাশে পরিত্যক্ত (সড়কের সরকারি) জায়গায় জানাজা নামাজের ব্যবস্থা করে দেবে বলে মসজিদ কমিটির কাছে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। কমিটি তাকে অগ্রিম ৬০ হাজার টাকা দেন। বাকি ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিতে বিলম্ব করায় রবি তার প্রভাব খাটিয়ে মসজিদের ব্যবহৃত টিন জানালা বিভিন্ন মালামাল নিয়ে আসে বলে লিখিত অভিযোগ আছে। আলোচ্য বিষয়ে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নুর ইসলাম রবি বলেন, দোকান পাট সব সড়কের জায়গা। ছোট দোকান আব্বা দেখাশুনা করে। পিছনের দোতলা বাড়িটা আমার। আমরা থাকি। মসজিদে জানাজা পড়ানোর জায়গার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন টাকা নেব কেন? মসজিদের কাজ টাকা নেওয়া যায়। সিন্ডিকেট সম্পর্কে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট না আমার আপন বড়সহ ওরা কয়েকজন মিলে কাজ করে। আমি দেখেশুনে দেয়।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ আলোচ্য বিষয়ে সম্পর্কে বলেন, আমিও আপনার মত বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি। আমি তাকে নজর দারিতে রেখেছি।কোন রকম অনিয়ম দুর্নীতির প্রমান পেলে বিধি-অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। মসজিদ কমিটির সাথে টাকা লেনদেনের এখনও প্রমান পায়নি। আর পরিত্যক্ত জায়গায় জানাজা নামাজ পড়লে তাতে কোন সমস্যা নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ