নিজের ইচ্ছা মতো অফিস করেন উপজেলা হাসপাতালের প্রধান সহকারী। ভালো লাগলে আসেন অফিসে না লাগলে থাকেন বাসায়। এভাবেই দীর্ঘদিন যাবত অফিস করে যাচ্ছে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের প্রধান সহকারী মশিউর রহমান খান।
জানা যায়, এরআগে তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। ২০২১ সালের ২৩ অক্টোবর সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রধান সহকারী হিসেবে যোগদান করেন মশিউর রহমান। যোগদানের পর থেকেই মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোনায়েম খানের শ্যালক পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে আধিপত্য বিস্তার করেন তিনি। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি নিজের খেয়াল খুশি মতো অফিস করে নিচ্ছেন সরকারি বেতন ভাতা সহ সকল সুযোগ-সুবিধা। তিনি গত তিনমাসে মাত্র অফিস করেছে ৭দিন। গত ৫ আগস্টের আগে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলার সাহস পায়নি।
সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের হারবাল সহকারী মুসফিকুর রহমান বলেন, প্রধান সহকারী মশিউর রহমান গত তিন মাসে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ দিন অফিস করেছেন। দীর্ঘদিন পর এই সপ্তাহের গতকাল সোমবার তাকে অফিসে দেখেছি। তিনি সারাবছর সকাল ১১ টায় অফিসে আসেন। নিজের ইচ্ছা মতো চলে যান।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মচারী বলেন, মশিউর রহমানের সাথে আমাদের স্যারের সাথে সম্পর্ক খুব গবীর। তাকে ম্যানেজ করেই তিনি এভাবেই ডিউটি করেন।
গত এক সপ্তাহে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে প্রধান সহকারী মশিউর রহমানকে তার রুমে পাওয়া যায়নি। অবশেষে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটায় প্রধান সহকারী মশিউর রহমানের সাথে তার কক্ষে কথা এই প্রতিবেদকের সাথে। এসময় তিনি বলেন, আমি গত ৩ মাস ঠিক মতো অফিস করেছি। মাঝে ১৫ দিন আমি ছুটিতে ছিলাম। হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তিনি বলেন স্যারের অনুমতি লাগবে। আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন। তিনি এসময় আরো বলেন,আমি ঢাকার আজিমপুর থেকে অফিস করি। আসতে একটু দেরি হয় এটা ঠিক আছে। মাঝে মধ্যে দুই একদিন অফিসে আসা হয় না। তিনি মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোনায়েম খানের শালা বলে পরিচয় দেন।
সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সৈয়দা তাসনুভা মারিয়া বলেন, মশিউর রহমান গত শনিবারও অফিস করেছে। আমি কারো পক্ষে সাফাই করবো না। আমার অফিসের অনেকেরই সমস্যা রয়েছে। মানিকগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা: মকছেদুল মোমিন বলেন, আমি তার বিষয়ে গত দুইদিন আগে অবগত হয়েছি। এটা সরকারি চাকরি বিধিমালা পরিপন্থী। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ট্রেনিংয়ে রয়েছে। তিনি ফিরে আসলে প্রধান সহকারী মশিউর রহমান খানের বিষয়ে বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বার্তাবাজার/এসএইচ