ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে একটি ‘অবিস্মরণীয় বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দেশটির প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় জুমার নামাজের পর দেওয়া একটি বক্তৃতায় তিনি এই কথা বলেন।
আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, এই সিদ্ধান্ত ন্যায়বিচার ও মানবতার বিরুদ্ধাচারী সকলের জন্য একটি বিশাল বিজয়। এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনের জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করবে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আইসিসির এই রায়কে যুক্তিসঙ্গত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এই রায় নিপীড়ন, নিষ্ঠুরতা ও হত্যাবিরোধী আইন ও প্রমাণের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে। এখন নেতানিয়াহু বিদেশ সফরে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আইসিসি যুগান্তকারী একটি রায় দিয়েছে। গাজা উপত্যকায় মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আদেশ দিয়েছে এই আদালত।
আইসিসির বিচারকরা বলেছেন, নেতানিয়াহু এবং ইয়োভ গ্যালান্ট গাজার বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে ব্যাপক এবং পদ্ধতিগত আক্রমণের অংশ হিসাবে হত্যা, নিপীড়ন এবং অনাহারকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জান্য দায়ী বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। এদিকে যুক্তরাজ্য, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, নেদারল্যান্ডসসহ অন্যান্য দেশ জানিয়েছে, তারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি করা আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মেনে চলবে। নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্ট এসব দেশে সফর করলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বরাবরের মতই এবারও ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়ার জন্য প্রসিকিউটরের তাড়া এবং এই সিদ্ধান্তের সমস্যাজনক প্রক্রিয়ার ত্রুটির কারণে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখের বেশি আহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু ছিল।
বার্তাবাজার/এসএইচ