নওগাঁর ধামইরহাটে শহীদ বুদ্ধিজীবি আব্দুল জব্বার মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের জায়গা অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি মহল সুকৌশলে ফাউন্ডেশনের জায়গা দখল করেছে। বেদখল হয়ে যাওয়া জমি ফিরে পেয়ে ফাউন্ডেশনের পক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ধামইরহাট থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়নের মুকুন্দপুর মৌজায় (মঙ্গলবাড়ী বাজার) মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত বগুড়া জজকোর্টের সাবেক জিপি এড.শহীদ আব্দুল জব্বার এর নামে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ফাউন্ডেশনের নামে মুকুন্দপুর মৌজায় তিন শতক জমি করা হয়। এব্যাপারে ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো.আব্দুল কুদ্দুস বলেন,ফাউন্ডেশনের নিজস্ব জায়গা ক্রয়ের সিন্ধান্ত মোতাবেক মুকুন্দপপুর গ্রামের মরহুম জামাল উদ্দিনের কন্যা গুলশানাহানারার ভোগ দখলীয় তিন শতক জমি ২৪/১১/২০১১ ইং তারিখে ধামইরহাট সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ফাউন্ডেশনের নামে ক্রয় করা হয়। যার দলিল নং-৫০০৭/১১।

পরবর্তীতে ওই জমি ফাউন্ডেশনের নামে খাজনা খারিজ সম্পাদন করা হয়। যার নামজারি মামলা নং-৬১২(১ঢ-১) ২১-২২,তারিখ-১৪/০৯/২০২১। সেই থেকে রাজস্ব প্রদান করে ভোগ দখলে থাকাবস্থায় মৃত মুকুন্দপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের পুত্র মো.নাজমুল হোসেন গত ১০/১০/২০২৪ ইং তারিখে ফাউন্ডেশনের জমি অবৈধভাবে দখলের জন্য প্রথমে টিন দিয়ে ঘেরে সুকৌশলে পরবর্তীতে ইটের প্রাচীর দিয়ে ফাউন্ডেশনের জায়গা দখল করে। বিষয়টি জানতে পেয়ে ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো.আব্দুল কুদ্দুস ও কোষাধ্যক্ষ কেএম লায়েক আলী গত ১৯/১০/২৪ ইং তারিখে ধামইরহাট থানায় এবং একই বিষয়ে গত ৬/১১/২৪ ইং তারিখে ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এব্যাপারে মুকুন্দপুর গ্রামে নাজমুল হোসেন এর ছেলে মো.আরাফাত হোসেন বলেন,আমার মরহুম দাদা জামাল উদ্দিনের নিকট থেকে আমার বাবা নাজমুল হোসেন সাড়ে নয় শতক জমি দলিল মূলে পেয়েছেন। ওই জমি দির্ঘদিন ধরে আমাদের দখলে আছে। আমাদের প্রাপ্ত জমির বাহিরে অন্য কারও জমি দখল করিনি। এব্যাপারে ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো.রাইসুল ইসলাম জানান,একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য,শহীদ বুদ্ধিজীবি আব্দুল জব্বার উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের মৃত ছফের উদ্দিনের ছেলে এবং সাবেক সচিব মো.ফজলুর রহমান বেনুর বড় ভাই। আব্দুল জব্বার বগুড়া জজকোর্টের জিপি ছিলেন। পাক বাহিনী তাঁর গ্রামের বাড়ী মল্লিকপুর থেকে আব্দুল জব্বার কে ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল ধরে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে পরিবার তাঁর লাশের কোন হদিস পায়নি। সাবেক সচিব ফজলুর রহমান বেুন এলাকায় শিক্ষা প্রসারে শহীদ বুদ্ধিজীবি আব্দুল জব্বার নামে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ