ফেনীর সোনাগাজীতে গায়ে আগুন দিয়ে মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়। পরে দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
ঘটনার দিন থেকে শুরু করে গতকাল সোমবার পর্যন্ত থানা-পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এই সাতজনকে আটক করে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- ওই মাদ্রাসার ইংরেজির প্রভাষক আফছার উদ্দিন (৩৩), আলিম পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম (২২), মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা (৩৮), অফিস সহকারী নুরুল আমিন (৫০) এবং স্থানীয় আলাউদ্দিন (২৫), সাইদুল ইসলাম (২১), জসিম উদ্দিন (৩০)।
আটকদের মধ্যে আফছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ বুধবার সকাল ১০টায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ওই ছাত্রীকে ডেকে তার কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। ওই ঘটনায় ছাত্রী মা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।
এর পর থেকে অধ্যক্ষের অনুগত একটি মহল মামলা তুলে নিতে ছাত্রীর পরিবারকে চাপ ও হুমকি দিতে থাকে। গত শনিবার ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় এসে হলে তার প্রবেশ পত্রসহ একটি ফাইল টেবিলের ওপর রেখে হলের বাইরে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়।
এ সময় একটি মেয়ে তার বান্ধবীকে মারা হচ্ছে বলে তাকে ডেকে প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলার ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে বোরকা, মুখোশ ও হাত মোজা পরা এবং মুখ ঢাকা চারজনকে দেখতে পায়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে তারা জোর করে পাশের টয়লেটে নিয়ে গিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে ওই ছাত্রীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় চারজন অজ্ঞাতনামাসহ তাদের সহযোগীদের আসামি করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ মার্চ তারিখে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করার পর থেকে নুর উদ্দিন, জাবেদ, শাহাদাত হোসেন শামীম, মহিউদ্দিন শাকিলসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়।
ওই ছাত্রীর ভাই বলেন, তাদের ধারণা হুমকিদাতাদের যোগসাজশে চারজন তার বোনকে পরিকল্পিতভাবে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, সোমবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আটজনের নাম উল্লেখ ও বোরকা পরা চারজনসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা মামলা দায়ের করেন ছাত্রীর ভাই।এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।