আগামীকাল স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ৬১৪ জন চরমপন্থি

আলোকিত জীবন ,সন্ত্রাসী পেশা ছাড়ি গড়ি এই শ্লোগানে সামনে আগামিকাল মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) পাবনার ঐতিহাসিক শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম মাঠে ১৫টি জেলার ৬১৪জন চরমপন্থীদের আগ্নেয় অস্ত্রসহ আত্মসমর্পন ।

পাবনায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নিকট আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ পাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। ২০ বছর আগে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নিকট দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার ৪ শতাধিক চরমপন্থি আত্মসমর্পণ করেছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় পাবনায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ আত্মসমর্পণ করার সুযোগ গ্রহন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে তারা। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও খুনোখুনিতে লিপ্ত চরমপন্থি সংগঠনের সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ১৯৯৯ সালে যারা আত্মসমর্পণ করেছিল সেই সময় তাদের আনসার বাহিনীতে বিশেষ আনসার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পুনর্বাসিত করা হয়েছিল।

পুলিশের একটি সুত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজশাহী অঞ্চলের চরমপন্থিদের দমনে ২০০৪ সালের দিকে বাংলাভাই, শায়েখ আব্দুর রহমানের জঙ্গি বাহিনীকে মাঠে নামানো হয়। এর পর তারাই একের পর এক পরবর্তীকালে শায়েখ আবদুর রহমান, বাংলা,ভাইয়ের জঙ্গি দল জেএমবি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশজুড়ে বোমা হামলা চালায়।

পরে তাদের দমনে সরকারকে বিশেষ অভিযান চালাতে হয়। আগামী ৯ এপ্রিলে চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান সমন্বয় করছেন পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম। তিনি জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় এখনো পূর্ববাংলা কমিনিস্ট পার্টি, পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি, পূর্ববাংলা লাল পতাকাসহ বিভিন্ন চরমপন্থি সংগঠন তৎপর রয়েছে।

তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ এবং নিজেদের দলীয় কোন্দলে খুনোখুনিতে লিপ্ত। আইন শৃংখলা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানেও চরমপন্থি সন্ত্রাসীদের তৎপরতা পুরোপুরি থামছে না। যে কারণে সরকার তাদের অন্ধকার জগত থেকে আলোতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৯ এপ্রিল পাবনার শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হবে চরমপন্থিদের আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ। এদিন পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁ, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, খুলনা, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, বাগেরহাট ও যশোর জেলার প্রায় ৬১৪ জন চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল ও পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পাবেন।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম আরো জানান, আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ৮ এপ্রিল আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থিদের স্ব-স্ব জেলা থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে পাবনায় নিয়ে আসা হবে। এজন্য পাবনায় বাড়তি নিরাপত্তামুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। র‌্যাব, পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রায় ৫০০ সদস্য মোতায়েন থাকবে। পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম আরো জানান, আত্মসমর্পণকারী যেসব চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাদের বিচার চলতে থাকবে।

এক সাথে বিপুল সংখক চরমপন্থি আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অপরাধের পরিমান কমে আসবে বলেও মনে করছেন পুলিশ সুপার। এ ছাড়া আত্মসমর্পণ করার পরও তারা আবার অপরাধে জড়াচ্ছে কিনা সে বিষয়ে পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর