প্যারোলে নয়, বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি

কোনো প্যারোল নয়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

দলটির পক্ষ থেকে আয়োজিত গণঅনশন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি যে, নিঃশর্তভাবে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা কোনো প্যারোলের কথা বলিনি।’

‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, জামিন পাওয়া তার অধিকার। যে মিথ্যা মামলায় তাকে জোর করে সাজা দেয়া হয়েছে, সেই মামলায় অন্যান্য ব্যক্তিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, যেকোনো মূল্যেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। সেই মুক্তির আন্দোলন আমাদের অবিলম্বে শুরু করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশকে বাঁচাতে হলে, মানুষকে বাঁচাতে হলে, ভবিষ্য প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে দেশনেত্রীকে বাইরে নিয়ে এসে তার (খালেদা জিয়া) নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে নিয়ে আসতে হবে- এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।

আসুন আমরা সবাই এ লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করি দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশনেত্রীর কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। তিনি যেটা চাচ্ছেন, তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার। কিন্তু সেখানে না করে তার মতের বিরুদ্ধে আবার সেই পিজি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) নিয়ে আসা হয়েছে।’

ফখরুল বলেন, পিজি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আমরা বলিনি। আমরা বলতে চেয়েছি যে, পিজি হাসপাতাল সরকারি হাসপাতাল, সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে সবসময়। সরকার সেই নিয়ন্ত্রণ করে তার চিকিৎসাকেও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তিনি সেখানে সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না। সেজন্য আমরা বলেছি, তার সুচিকিৎসার জন্য, তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে।

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনের মঞ্চে মাদুর বিছিয়ে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশন পালন করেন।

কর্মসূচিতে মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টায় ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে এ অনুষ্ঠানের ঘোষণা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় মিলনায়তনেই অনশন কর্মসূচি শুরু হয়।

বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচায্র্ অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ মহাসচিবসহ নেতাদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।

প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় গণ-অনশনে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, গোলাম আকবর খন্দকার, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, মাহবুবুল হক নান্নু, খন্দকার আবু আশফাক, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নীরব, মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, উলামা দলের শাহ মো. নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ছাত্রদলের আকরামুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনশনে একাত্মতা প্রকাশ করেন গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মোহসীন মন্টু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান তালুকদার, ২০ দলীয় জোটের শরিক খেলাফত মজলিসের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবুল কাদের, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খন্দকার লুফর রহমান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, জমিয়তে উলামা ইসলামের মাওলানা নূর হোসেইন কাশেমী, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির রিটা রহমান, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামি পার্টির আবু তাহের।

গণ-অনশনে বিএনপির আবদুল আউয়াল মিন্টু, মনিরুল হক চৌধুরী, সাহিদা রফিক, সাখাওয়াত হাসান জীবন, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, গৌতম চক্রবর্তী, দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল আউয়াল খান, মীর নেওয়াজ আলী, হারুনুর রশীদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, খন্দকার মারুফ হোসেন, নিপুণ রায় চৌধুরী, সাইফুল আলম নিরব, শফিউল বারী বাবু, আতাউর রহমান আঙ্গুর, সেলিম রেজা হাবিব, কাজী আবুল বাশার, একে শামসুল হক, নবী উল্লাহ নবী, হাসান জাফির তুহিন, তকদির হোসেন জসিমসহ অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর