গ্রামে গ্রামে ঠকাচ্ছে ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী

বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভারের পণ্য ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী নিয়মিত ব্যবহার করেন রেবা (ছদ্মনাম)। সাধারণত টিউবই কেনেন তিনি। তবে সম্প্রতি তিনি কিনেছেন একটি মিনিপ্যাক। দাম ১৫ টাকা। ভেতরে ৯ গ্রাম ক্রিম রয়েছে বলে গায়ে লেখা।

রেবা নিয়মিত ৫০ গ্রামের টিউব কিনতেন। তার দাম ১১৫ টাকা। অংকের ভালো ছাত্রী রেবা হিসাব কষে দেখলেন, ইউনিলিভার তাকে ঠকিয়েছে; ওজনে কম দিয়েছে।

বাজারে সাধারণত ৯ গ্রাম, ২৫ গ্রাম ও ৫০ গ্রাম, এ তিন রকমের ফেয়ার লাভলী পাওয়া যায়। ৯ গ্রামের দাম ১৫ টাকা, ২৫ গ্রামের দাম ৬০ টাকা। আর ৫০ গ্রামের দাম ১১৫ টাকা।

৯ গ্রামের দাম ১৫ টাকা হলে ১ গ্রামের দাম পড়ে ১ টাকা ৬৬ পয়সা। সে হিসেবে ২৫ গ্রামের দাম হওয়ার কথা ৪১ টাকা ৬৬ পয়সা। অথচ সেখানে আপনাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা। ইউনিলিভার তাদের হিসাবমতেই ১৮ টাকা ৪৪ পয়সা বেশি নিচ্ছে। একইভাবে ৫০ গ্রাম ফেয়ার এ্যান্ড লাভলীর টিউবের দাম পড়ার কথা ৮৩ টাকা ৩৩ পয়সা। কিন্তু তারা নিচ্ছে ১১৫ টাকা। ক্রেতাকে বেশি দিতে হচ্ছে প্রায় ৩২ টাকা।

শুধু নারীদের ফেয়ার এন্ড লাভলী নয়, ছেলেদের জন্য তাদের পণ্য মেনস ফেয়ার এ্যান্ড লাভলীতে প্রতারণা আরও বেশি। এটিও ৯ গ্রাম, ২৫ গ্রাম ও ৫০ গ্রাম পরিমাণে পাওয়া যায়। এটি ৯ গ্রামের দামও ১৫ টাকা। তবে ২৫ গ্রামের দাম ৭০ টাকা। আর ৫০ গ্রামের দাম ১২৫ টাকা।

হিসাব কষলে দেখা যায়, ইউনিলিভারেরই ঠিক করা দাম মতেই মেনস ফেয়ার এ্যান্ড লাভলীর প্রতি গ্রামের দাম দাঁড়ায় ১ টাকা ৬৬ পয়সা। সে হিসাবে ২৫ গ্রামের দাম হওয়ার কথা ৪১ টাকা ৬৬ পয়সা। অথচ সেখানে গুনতে হচ্ছে ৭০ টাকা। ৫০ গ্রামের দাম হওয়ার কথা ৮৩ টাকা ৩৩ পয়সা। কিন্তু তারা নিচ্ছে ১২৫ টাকা।

মেনস ফেয়ার এ্যান্ড লাভলীতে ইউনিলিভার ২৫ ও ৫০ গ্রামে যথাক্রমে ২৮ ও ৪২ টাকা বেশি নিচ্ছে।

রেবা বলেন, একই পণ্যের দামে তাদের হিসাবমতেই এত গড়বড়? তারা নিশ্চিতভাবেই প্রতারণা করছে। কারণ, হয় তারা ২৫ ও ৫০ গ্রামের ক্ষেত্রে ওজনে কম দিয়ে বেশি টাকা নিচ্ছে; নয়তো মিনি প্যাকে খারাপ মানের পণ্য দিচ্ছে।

এ বিষয়ে কনজ্যুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘আসলে এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে আমাদের নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার নেই। এটার জন্য বিএসটিআই কোনো তদারকিই করছে না।’

‘আমরা শুধু বিএসটিআইকে এ অনিয়মের জন্য জানাতে পারি। ব্যবস্থা নেওয়ার কাজটা তাদেরই করতে হবে,’ বলেন নাজের হোসাইন।

এ ব্যাপারে ইউনিলিভারের মিডিয়াবিষয়ক কর্মকর্তা আজরিনের সাথে যোগাযোগ করা করে তিনি প্রশ্ন শুনেই ক্ষেপে যান। বলেন, ‘রাতে কেন ফোন দিয়েছেন? এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর