যশোরে এবার বাঙালি জাতির বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হবে না

আসছে বাঙালি জাতির সর্বজনীন বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পহেলা বৈশাখ,এবার এ পহেলা বৈশাখ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে হবে।

এমনই ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আর এ ঘোষণার প্রতিবাদে যশোরের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। (বৃহস্পতিবার ০৪ই এপ্রিল)উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের যৌথসভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ডিএম শাহিদুজ্জামান,সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু ও ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু,যুগ্ম সম্পাদক শরীফুল ইসলাম,কোষাধ্যক্ষ রওশন আরা রাশু,জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু,উদীচীর সহ-সভাপতি তন্দ্রা ভট্রাচার্য্য,পুনশ্চের প্রতিষ্ঠাতা সুকুমার দাস,তীর্যকের প্রতিষ্ঠাতা দীপংকর দাস রতন,নৃত্যবিতানের প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জীব চক্রবর্তী, সুরবিতানের সাবেক সম্পাদক বাসুদেব বিশ্বাস,সপ্তসুরের রফিকুল ইসলাম,যশোর শিল্পী গোষ্ঠীর প্রদীপ চক্রবর্তী রানা,স্বরলিপির নিবাস মন্ডল,ভৈরবের সম্পাদক খাদিজা ইসলাম তন্বী প্রমুখ

জানা যায়,প্রতিবছর যশোরের অন্তত ২৫টি সাংস্কৃতিক সংগঠন বর্ণিল আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে আসছে।কয়েক বছর ধরে সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সংকুচিত করা হচ্ছে।ফলে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর আয়োজনের পরিধি কমেছে।এতে সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো ক্ষুব্ধ।

এবারও সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।সাংস্কৃতিক নেতাদের দাবি,পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব।আর এ উৎসবকে বন্ধ করে দেয়ার জন্য ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।

সেই চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করার জন্য সংস্কৃতিকর্মীরা নিরন্তর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন যা মুক্তিযুদ্ধের সরকারের জন্য সহায়ক।অথচ সরকার প্রতিক্রিয়াশীল চক্রটিকে মোকাবেলা না করে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানকে শৃঙ্খলিত করার যে অপকৌশল গ্রহণ করেছে, যশোরের সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের শুরু থেকেই তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।

কিন্তু তা উপেক্ষিত থাকায় প্রতিবাদ হিসেবে এবার পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বিকেলের সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত করা হলো।এবং তারা আগামী রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ এবং বিকেলে শহরের চিত্রা মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষনা দেন।

যদিও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর বর্ষবরণ উৎসবের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।বাহারী নিমন্ত্রণ কার্ড, অনুষ্ঠানের মহড়া চলছে পুরোদমে। দিনব্যাপি অনুষ্ঠানামালা নিয়ে চলছে তোড়জোড়।

আর এরিমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণায় আশাহত সাংস্কৃতিক কর্মীরা।শেষ পর্যন্ত বর্জনের ঘোষণা বলবৎ থাকবে, নাকি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী হবে বর্ষবরণ উৎসব।সেটি নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।কারণ বিগত কয়েক বছর ধরে বর্ষবরণ উৎসবে কড়া নির্দেশনা রয়েছে সরকারে।নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে এনে অনুষ্ঠানের সময় সংকোচন করা হচ্ছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর