বাংলাদেশ খাদ্যে উৎপাদনে আজ বিশ্বের রোল মডেল-শেরপুরে কৃষিমন্ত্রী

শেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী শেরপুর পৌর সভার গৌরবের ১৫০ বছর পূর্তি উৎসবের টানা চার দিনের সমাপনী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান মালার আয়োজনে করা হয়।

এ উপলক্ষে ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় শহীদ দারোগ আলী পৌরপার্ক মাঠে পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেলুন ও শ্বেতকপোত উড়িয়ে সার্ধশত বার্ষিকীর সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

সার্ধশত বার্ষিকী উদযাপন কমিটির আয়োজনে চতুর্থ দিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ বীরমুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি, নৌ পরিবহন সচিব মোঃ আব্দুস সামাদ, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের অতিরিক্ত সচিব মোঃ দিলদার আহম্মেদ, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) এটিএম জিয়াউল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল্লাহ, শেরপুর জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এড. চন্দন কুমার পাল পিপি, আওয়ামীলীগ নেতা ও কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সমন্বয়ক প্রকৌশলী মোঃ নজরুল ইসলাম শেলী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সার্ধশত বার্ষিকী অনুষ্ঠানের সভাপতি পৌর মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন। এসময় তিনি পৌর সভার প্রথম প্রশাসক প্রয়াত টি এ ডনো, অন্যান্য চেয়ারম্যানগণ ও মেয়রগণকে স্মরণ করেন।

এছাড়াও প্রধান অতিথির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, পিছিয়ে পড়া শেরপুর পৌরসভাসহ শেরপুর জেলার উন্নয়ন এবং সবুজায়ন, পরিচ্ছন্ন পৌরসভা এবং মডেল পৌরসভা গড়তে কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সহযোগিতা কামনা করেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের চাল উৎপাদনকারী অন্যতম জেলা শেরপুরের বন্ধ হয়ে যাওয়া চাতালগুলি পুনরায় চাল উৎপাদনে ফিরিয়ে আনতে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের চাল আমদানী বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেন।

এসময় প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক তার বক্তব্য বলেন, শেরপুর একটি অগ্রসর জেলা। শেরপুর পৌরসভার ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৬ মাস ধরে পৌর সভার আয়োজনে উৎসব চলছে। এর ধারাবাহিকতায় সার্ধশত বার্ষিকীর চারদিন ব্যাপী সমাপনী দিনে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে প্রাণের মেলা বসেছে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে শেরপুর অনেক গুরুত্ব বহন করেছিল এবং সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরীত শেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী পৌরসভা ১৫০ বছর পূর্তি অনেক গুরুত্ববহন করে।

শেরপুর পৌরসভার উন্নয়ন যেভাবে অব্যাহত রয়েছে এতে করে শেরপুর পৌরসভা বাংলাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ পৌরসভা হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যেয় তিনি আরো বলেন, বিএনপি জোট সরকারে সময় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ এবং খাদ্য ঘাটতি ও সার সংকটে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়ে ছিল।

তখন ৩৩শ টাকা সারের বস্তা ৪৭শ টাকায় কিনতে হতো। বর্তমান সরকার ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ক্ষমতায় আসার পর মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষককের কথা চিন্তা করে সারের দাম কমিয়ে দিয়েছে এবং সেই সাথে বিদ্যুতের উৎপাদন শীর্ষস্থানে নিয়ে গেছে, সেই সাথে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে আজ বিশ্বের রোল মডেল।

যারা বলেছিল বাংলাদেশ ভিক্ষুকের দেশ, তারাই আজ বলছে বাংলাদেশ আজ একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে। বিএনপি জোট সরকারের আমলে খাদ্যে পিছিয়ে দেয়া দেশকে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং দারিদ্র ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে।

এদিকে শেরপুরের জনগণের দাবি রেললাইন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ফোরলেন রাস্তা নির্মাণের প্রতি সমর্থন এবং সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।

এসময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সারোয়ার জাহান, ডাঃ সেকান্দর আলী কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, হুইপ পত্নী শান্ত রহমান, ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এসএম ওয়ারেজ নাঈম, শেরপুর চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি আসাদুজ্জামান রওশন, সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ মাসুদ, বিএমএ ও স্বাচিপ সভাপতি ডাঃ এমএ বারেক তোতা, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান, উপ দপ্তর সম্পাদক বিনয় কুমার সাহা, রোটারী ক্লাবের প্রেসিডেন্ট মনির উদ্দিন আহম্মেদ, শেরপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি মোঃ শরিফুর রহমান, পৌর লেডিস ক্লাবের সভানেত্রী শাহিনা আক্তার পারভীন, ডিএফএ সভাপতি মানিক দত্ত, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ হায়দার আলী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ আমির আলী সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি এড. আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্তসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আসা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা ও সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় পৌর সভার সার্ধশত বার্ষিকী মঞ্চে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ইমরানসহ স্থানীয় শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর