যে করেই হোক রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে হবে

জাতীয় সংসদের বিরাধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, রোহিঙ্গা এখন আমাদের বিরাট সমস্যা। অনেক দিন হয়ে গেলো প্রায় ১২/১৪ লাখ রোহিঙ্গার দেখাশুনা করতে হচ্ছে। তারা এখন মাদক বিক্রি করছে। ইয়াবা বিক্রি করছে।

পাসপোর্ট করে বিদেশ যাচ্ছে। তাদের জন্য আর কি করবো। এই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আর রাখা যাবে না। তাহলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদিও মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এখন সময় হয়েছে তাদের চলে যাওয়ার। যেকোনো ভাবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফিরে যেতে হবে। যেমন করেই হোক তাদের ফেরত পাঠাতে হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বিরোধী দলের নেতার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমান বিরোধী দল সংসদে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে উল্লেখ করে রওশন এরশাদ বলেন, গ্যাসের মূল্য বাড়ানোয় জনগণের অনেক সমস্যা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ মধ্যবিত্ত গ্যাসের দাম বাড়ায় তাদের কষ্ট হয়। এছাড়া মানুষ নিজ দেশের জিনিসের বেশি দাম দিতে চায় না।

তিনি বলেন, ডেঙ্গুর প্রভাবে বাংলদেশের মানুষ বিপর্যস্ত। ডেঙ্গু এমনভাবে বেড়ে গিয়েছিলো যা বলার বাইরে। যদি আমরা নিজেরা সতেচন হতাম তাহলে মানুষদের বাঁচাতে পারতাম। প্রতিদিন হাজার হাজার লোক হাসপাতাল ভর্তি হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে। আমাদের দেশটাকে পরিস্কার রাখতে হবে।

ময়লা যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা আবার ফিরে আসবে বলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বলছে। পাহাড়ি এলাকায় ম্যালেরিয়া দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে এখন থেকেই সচেতন না হই তাহলে ম্যালেরিয়া ভীষণ আকার ধারণ করবে।

এটা বিশ্বস্বাস্থ্য থেকে বলা হচ্ছে। যক্ষ্মা থেকে বাঁচার জন্য আগে থেকেই প্রতিরোধী ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সচেতন হলে এসব রোগ থেকে জনগণক বাঁচাতে সক্ষম হবো। কিশোর গ্যাং সম্পর্কে রওশন বলেন, এরা সন্ত্রাসী হচ্ছে। গুন্ডামি করছে। মাদক নিচ্ছে। মাদক এখানে সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে। ওরা যদি গ্যাং এ রূপান্তরিত হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যত অন্ধকার।

যারা শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ছে তাদের আবার স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আরেকটি কাজ করতে হবে সেটা হল শিশুশ্রম দূর করতে হবে। পরিবার ছাড়া এই গ্যাং কালচার দূর হবে না। এ ব্যাপারে প্রথমেই পিতা-মাতাদের সচেতন হতে হবে। ঝরে পড়া সন্তানদের দিকে নজর রাখলে তারা জঙ্গী হতে পারবে না। খেলাধুলার প্রতি যদি তাদের আনতে পারা যায় তাহলে তাদের এসব বন্ধ হবে।

গুজব সম্পর্কে তিনি বলেন, আসল কথা না জেনেই মানুষ পিটিয়ে হত্যা করছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। কূটনৈতিকদের অর্থনৈতিক কাজে আরো সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এর মাধ্যমে আরো অনেক জিনিস রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করত পারি।

এছাড়া পোষাক খাত আরো জোরদার করার পাশাপাশি বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর কথা বলেন তিনি। বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, আমাদের বাচ্চাদের যে করেই হোক স্কুলে পাঠাতে হবে। স্কুলে ঝরে পড়াদের আবার স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এছাড়া অভিভাবকেদের তিনি বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানোর দিকে নজর দিতে বলেন।

রওশন বলেন, যদি অন্তত সবাইকে ম্যাট্রিক পর্যন্ত পাশ করানো যায় তাহলে কিছু একটা করে খেতে পারবে। তিনি বলেন, শিশু শ্রম আমাদের আর একটা বড় চ্যলেঞ্জ। এ শিশুশ্রম যে করেই হোক বন্ধ করতে হবে।

অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জনিয়ে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হতে পারে যদি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র দূতরা সে দেশে আমাদের বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করে। তিনি এসময় বিদেশী শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

বিমান বন্দরে যাতে তারা কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নজর দেবার জন্য বিমান মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। সেই সাথে তিনি সরকারি দলের মত বিরোধী দলীয় চিফ হুইপকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার জন্য স্পিকারের প্রতি দৃষ্টি আর্কষণ করেন।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর