শনিবারই হতে পারে শেষ দিন !

নানা অনিয়ম, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও অভিযোগের পাহাড় জমেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে। একারণে খুব দ্রুত তাদের সরিয়ে দেয়া হতে পারে। তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স মনোভাব প্রকাশ করেছেন।

আগামী শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় শোভন-রাব্বানীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।

জানা যায়, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল এজেন্ডা ছিলো রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচন এবং কয়েকটি উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা। কিন্তু সেখানে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে।

২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়।

কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ ১ বছর না পেরোতেই তাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতাসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কথা ওঠে আসে।

এর মধ্যে স্বেচ্ছাচারিতা, অদক্ষতা ও অদূরদর্শিতা, নেতাকর্মীদের প্রত্যাশিত মূল্যায়ন না করা অন্যতম। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপেক্ষা, ফোন রিসিভ না করার অভিযোগও আছে।

এর বাইরে রাতজাগা ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা, কর্মসূচিতে বিলম্বে যাওয়া, প্রধান অতিথিদের বসিয়ে রাখা, জেলা সম্মেলন করতে না পারা, বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি গঠনের বিষয়ও এ তালিকায় রয়েছে।

এসব দেখে এবং শুনে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত শনিবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিতে বলেন। সেদিন দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে শোভন ও রাব্বানীর গণভবনে যাতায়াতের স্থায়ী অনুমতি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তথ্যানুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দেখা করার জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও অঙ্গ-সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের মৌখিকভাবে অনুমতির পাশাপাশি তালিকা দেয়া থাকে। ওই তালিকা থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম বাদ দেয়া হয়েছে।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তাতে ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন ছাত্রলীগের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের ওপর। তিনি কমিটি ভেঙে দিতে বলেছেন।

ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃতি দিয়ে ওই নেতারা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি ছাত্রলীগের এমন নেতা চাই না, যাদের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পর্যন্ত উঠেছে।’

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর