জোরপূর্বক ঘর-বাড়ি ভেঙে জমি দখলের চেষ্টা

কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের পশ্চিম বামনশুর এলাকায় হামলা চালিয়ে জোরপূর্বক ঘর-বাড়ি ভেঙে জমি জবরদখল করার অভিযোগ উঠেছে অনুমোদনহীন বামনশুর মডেল টাউন নামে একটি প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে। এ সময় হামলাকারীদের বাধা প্রদান করায় হামলাকারীরা তাণ্ডব চালিয়ে ১০/১২টি বাড়ি-ঘর ভাঙচুরসহ প্রায় ৩০ জনকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে।

মামলার বাদী মো. আনিসুর রহমান জানান, আমিসহ আমার প্রতিবেশীরা কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন পশ্চিম বামনশুর এলাকার বামনশুর মডেল টাউন এর পশ্চিম পাশে দীর্ঘ ১৫-২০ বছর যাবৎ জমি ক্রয় করে ঘার-বাড়ি নির্মাণ করে পরিবারসহ বসবাস করে আসছি।

আমাদের জমির পাশে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাজি সালাউদ্দিন লিটন ও তার সাথের লোকজন মিলে তৈরি করছে বামনশুর মডেল টাউন নামে হাউজিং প্রকল্প।

এ প্রকল্পের লোকজন বিগত ৪/৫ বছর যাবৎ তাদের জায়গাগুলো হাউজিং প্রকল্পের আওতাভুক্ত করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু আমরা বরাবরই প্রকল্পের লোকজনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছিলাম।

এ জন্য প্রকল্পের লোকজন আমাদের বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকিসহ নানাধরনের ষড়যন্ত্র করে আসছিল। গত ১০ সেপ্টম্বর দুপুরে অজ্ঞাতনামা প্রায় ১৫০/২০০ জন লোক রামদা, লোহার রড, বাঁশ ইত্যাদি দ্বারা সজ্জিত হয়ে আমার ঘর-বাড়িসহ প্রতিবেশীদের বাড়ি জোরপূর্বক ভেঙে বাড়ির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের প্রস্তুতি নিতে আসে। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাদের ওপর আক্রমণ করে। এ হামলার ঘটনায় প্রায় ৩০ জন আহত হয়।

আনিসুর রহমান আরো অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা তাদের বাড়ি-ঘর এলোপাতাড়ি ভাঙচুর করে এবং এতে তাদের প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এ ছাড়া হামলাকারীরা প্রায় ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলার ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে মো. মনির (৩৮) রাকিবুল ইসলাম (২৮) ও নাইম হোসেন হৃদয় (২৮) নামে তিনজনকে আটক করেছে।

হামলার ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হাজি সালাউদ্দিন লিটন বলেন. আমাদের এ প্রকল্পটির পরিচালক অনেক। আমাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ থাকার কারণে প্রকল্পের কাজ প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিল।

বর্তমানে আমাদের এ প্রকল্পের ভেতরে বড় বড় গাছ পালা জন্ম হওয়ায় সেখানে চুরি ডাকাতি ও মাদক সেবন বেড়ে যায়। যেহেতু আমি এলাকার চেয়ারম্যান এ জন্য আমার কাছে লোকজন অভিযোগ করলে আমি সেখানে শ্রমিক পাঠাই প্রকল্পের আগাছা কাটার জন্য। কিন্তু সেখানে আমরা কখনোই কারো ঘর-বাড়ি নেওয়ার প্রস্তাব করি নাই।

মারামারি বিষয়টি আমি পরে শুনেছি। আর বাদী আনিসুর রহমানকে আমি তাকে চিনিও না। আমাদের দুর্নাম করার জন্য তৃতীয় কোনো পক্ষ তাদের সাথে কাজ করছে বলে আমার ধারণা।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বাদীর অভিযোগের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বামনশুর মডেল টাউন হাউজিং প্রকল্পের লোকজন তার পাশ্ববর্তী এলাকার জায়গা ক্রয় করার জন্য প্রস্তাব দেন।

সে প্রস্তাবে ওই গ্রামের লোকজন রাজি না হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাঙচুরসহ মারপিট করে কয়েকজনকে আহত করে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তিনজন হামলাকারীকে আটক করেছি।

পরে ভুক্তভোগী আনিসুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা দিলে আজ বুধবার দুপুরে আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বার্তাবাজার/এম.কে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর