দুই হাঁটুতে কালো দাগ রয়েছে মিন্নির

রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হয়ে যাওয়ার পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন কিশোর। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে মিন্নি অসুস্থ। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে তার।’

মিন্নির বাবা আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাসায় ফিরে চুপচাপ হয়ে আছেন মিন্নি। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন স্বজনদের দিকে। কিছুই বলছে না। কি যেন একটা চাপা কষ্ট বুকে বিঁধে আছে। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে চোখ থেকে বেরিয়ে আসছে পানি। ’

মোজ্জাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘একদিকে স্বামী হারানোর শোক, অপরদিকে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা। সব মিলিয়ে ভালো নেই আমার নির্দোষ মেয়েটা।’ মিন্নির বাবা আরও বলেন, ‘দুই হাঁটুতে কালো দাগ রয়েছে মিন্নির। হাঁটুর ব্যথায় হাঁটতে পারে না সে। চঞ্চল ও সদালাপী মিন্নি এখন কারও সঙ্গে কথা বলে না। খেতে চায় না কিছুই।

নিজের ঘরে সবসময় চুপচাপ থাকে সে। কখনো কখনো কাঁদে মিন্নি। যে ঘরে মিন্নি থাকে সেই ঘরে রিফাতের সঙ্গে তার অনেক স্মৃতি। এসব স্মৃতি মিন্নিকে আপ্লুত করে। ঘুমের মধ্যেও কেঁদে ওঠে, চিৎকার করে।’

মিন্নির উন্নত চিকিৎসা দরকার জানিয়ে তার বাবা বলেন, ‘মিন্নি অনেক অসুস্থ। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমরা মিন্নির আইনজীবীর পরামর্শ নিয়েছি। কয়েকদিন পর রিফাত হত্যা মামলার ধার্য তারিখ রয়েছে।

ওই তারিখে মিন্নিকে আদালতে হাজির হতে হবে। ওই তারিখের পরে মিন্নির উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। আপাতত চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে মিন্নির চিকিৎসা চলছে।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মামলার পুনঃতদন্তের অনুরোধ জানিয়ে মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘আমি আবারও প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি, এ মামলা পুনঃতদন্ত করে, সত্যকে উদঘাটন করে, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’

গত ২৯ আগস্ট আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মিন্নিকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।আদালত বলেন, মিন্নির প্রতি একটাই নির্দেশ, তিনি তার বাবার জিম্মায় থাকবেন এবং মিডিয়ার সামনে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না এবং জামিনের অপব্যবহার করলে তার জামিন বাতিল করা হবে বলেও আদেশে বলা হয়েছে।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। ওই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী তাকে রামদা দিয়ে কোপাচ্ছেন। ঘটনার দিন থেকেই নিখোঁজ হন তারা। ছয় দিন পর গত ২ জুলাই নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। পরে এই মামলায় রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর