মুশফিক সুযোগটা দুহাতে ফেলে দিলেন!

আফগানদের বিপক্ষে চতুর্থ দিনে শুরুতে বোলিং শুরু করেছিলেন সাকিব আল হাসান। তার পঞ্চম বলে ফিরে এল বাংলাদেশের জন্য এক হতাশার দৃশ্য।

পয়েন্ট অঞ্চলে খেলেই রানের জন্য পড়িমরি করে ছুটেছিলেন আফসার জাজাই। অন্য প্রান্ত থেকে সাড়া দেন ইয়ামিন আহমদজাই। কিন্তু পয়েন্ট থেকে ফিল্ডারের দ্রুতগতির থ্রো তৈরি করে রানআউটের সুবর্ণ সুযোগ। অথচ এক যুগ সময়ের বেশি অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম কিনা সুযোগটা দুহাতে ফেলে দিলেন!

সেই পুরোনো অভ্যাস। থ্রো আসার আগেই স্টাম্পের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মুশফিক। তাতে নষ্ট হয়েছে বল সরাসরি স্টাম্পে লাগার সম্ভাবনা। আর বল ধরে স্টাম্প ভাঙতেও দেরি করেছেন মুশফিক। শরীর ঘুরিয়ে স্টাম্প ভাঙতে তো এমনিতেও কয়েক সেকেন্ড দেরি হয়। ক্রিকেটে রানআউট থেকে বাঁচতে এটুকু সময় যথেষ্ট। আর মুশফিক তো মহেন্দ্র সিং ধোনি নন যে স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি খাটিয়ে ভেবে নেবেন, যেহেতু সামনে দাঁড়িয়েছেন, তাই বল গ্লাভসবন্দী করার চেয়ে হাতের টোকায় স্টাম্পের দিকে পাঠালে সময় কম লাগবে।

এ সুযোগে নিশ্চিত রানআউট থেকে বেঁচে যান ইয়ামিন আহমদজাই। আর একটি উইকেট ফেলার বদলে আফগানিস্তানের স্কোরবোর্ডে উল্টো ১ রান যোগ করেন মুশফিক!

ভুল হতেই পারে। তবে মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ কেউ একই ভুল বারবার করলে প্রশ্নটা জাগতেই পারে, উইকেটকিপিংয়ের মৌলিক বিষয়াদি তার মনে আছে তো?

বিশ্বকাপে ওভালের সে ম্যাচটা নিশ্চয়ই এখনো মনে আছে? তামিমের থ্রো সরাসরি স্টাম্প ভেঙে দেওয়ার পথে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। স্টাম্পের পেছনে না থেকে তিনি দুহাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সামনে। থ্রোটা টেনে এনে উইকেট ভাঙবেন বলে। উদ্দেশ্য ছিল খুবই মহৎ। কিন্তু কখনো কখনো আগবাড়িয়ে কিছু না করে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা ভালো। মুশফিক ভুল করেছিলেন ওখানেই। হাত বাড়াতে গিয়ে বল গ্লাভসে আসার আগেই কনুইয়ের গুঁতোয় ফেলে দিলেন বেল!আর সে যাত্রায় বেঁচে যান কিউই দলনেতা।

ওই সময় ওই আউট ম্যাচের ফল বদলে দিত। কে জানে বাংলাদেশের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সটাও অনেক রঙিন দেখাতে পারত। কারণ, টেবিলের হিসেব বলছিল, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচটা জিতলে সেমিফাইনালে ওঠার পথে অনেকটাই এগিয়ে থাকত বাংলাদেশ। মুশফিকের শিশুসুলভ ভুলে তা না হওয়ার জ্বলুনি বেড়েছে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ পয়েন্ট টেবিলে অষ্টম হয়ে বিদায় নেওয়ার পর। কেন বারবার এমন করছেন মুশফিক?

ব্যাটিংয়ে প্রভাব রাখে বলে উইকেটকিপিংয়ের গ্লাভস খুলতে রাজি নন মুশফিক। তার মতো ব্যাটসম্যানের ব্যাটিংটাও বাংলাদেশের বড় দরকার। কিন্তু এভাবে বারবার যেভাবে ভুল করছেন, তার ওপর রাখা আস্থাটুকু ফেলে দিচ্ছেন, তাতে প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। প্রশ্নটা হলো, একজনের ব্যাটিং ভালো হবে—এ শর্তে পুরো দলের ক্ষতি মেনে নেওয়া আর কত দিন?

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর