জাবিতে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীকে মারধর; বিক্ষোভ মিছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ইস্যুতে আন্দোলরত এক শিক্ষার্থীকে তুচ্ছ ঘটনার জেরে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহীদ রফিক জব্বার হল সংলগ্ন খাবার দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কয়েকজন শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন।

ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম অভিষেক মন্ডল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের (৪১ ব্যাচ) ও শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র। একই সাথে তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মোঃ নজরুল ইসলাম সাইমুম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ বিভাগের (৪৪ ব্যাচ) ও আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের আবাসিক ছাত্র। একই সাথে তিনি জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে চলমান আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার দাবি করেছেন।

প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভুক্তভোগী সাইমুম শহীদ রফিক জব্বার হলের সামনে খাবারে দোকানে নাস্তা করতে যান। এ সময় পাশের সিটে বসা ছিলেন অভিষেক মন্ডল। নাস্তারত অবস্থায় সাইমুমের মুঠোফোন একটি কল আসে। সে কলটি রিসিভ করে কথা বলতে থাকলে অভিষেক মন্ডল ধমক দিয়ে তাকে আস্তে কথা বলতে বলেন ও সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। পরে সাইমুম স্থান ত্যাগে অস্বীকৃতি জানালে তাকে কলার ধরে দোকানের বাহিরে বের করে লাকড়ি দিয়ে মারধর করে অভিষেক মন্ডল।

মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী সাইমুম ইসলাম বলেন, আমি সকালের নাস্তা করছিলাম। এ সময় একটি জরুরি ফোন রিসিভ করে কথা বলি। কিন্তু পাশে বসে থাকা অভিষেক মন্ডল ভাই আমার ওপর চড়াও হন। পরে কলার ধরে দোকানের বাহিরে এনে লাকড়ি দিয়ে মারধর করেন।

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা অভিষেক মন্ডল বলেন, আমার বন্ধুকে সাথে নিয়ে দোকানে নাস্তা করতে গিয়েছি। সেখানে অনেক সিট ফাঁকা ছিল কিন্তু সাইমুম গা ঘেঁষে আমাদের পাশে বসে। এ সময় তার ফোনে কল আসলে সে উচ্চ স্বরে কথা বলতে থাকে। পরে আমি তাকে একটু ধমক দিয়ে কথা বলি। তারপর সে আমার সাথে বেয়াদবী করলে একটু হাতাহাতি হয়। মারামারির কোন ঘটনা ঘটে নি। মারধরের অভিযোগ মিথ্যা।

এ বিষয়ে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেঝ তাঁর ফোনে সংযোগ পাওয়া যায় নি।

এদিকে উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে সংঘটিত মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূনরায় নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির প্রতিবাদে আমরা আমাদের বিবেকের তাড়নায় আন্দোলন করে চলেছি। এই আন্দোলনের জের ধরে একজন ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থী অন্য একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করতে পারেনা। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়। আজ দূর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারে আন্দোলন কারী কর্মীদের প্রশাসনের সাথে বসার কথা ছিলো। কিন্তু আমাদের সহকর্মীর সাথে এমন ঘটনার উপযুক্ত বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আলোচনায় বসবো না। প্রশাসনের নিকট আমাদের দাবি, এই অপরাধের দ্রুত যথাযথ বিচার করুন, বিচার করতে হবে। তারপরই আমরা আলোচনায় বসবো। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবেই।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর