শিক্ষককে পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অমূল্য রতন হালদার নামে এক শিক্ষককে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি ওই ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামের মহেন্দ্রলাল হালদারের ছেলে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার উপজেলার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সবুজ ঘরামী নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে শ্রেণিকক্ষে পড়া না পারার কারণে গণিত শিক্ষক আশীষ চন্দ্র বড়াল মারধর করেন। এ ঘটনায় সবুজ ঘরামীর পরিবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদারকে অভিযোগ করলে তিনি বিষয়টি চেপে যেতে বলেন।

ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য রীনা রাণী মন্ডল। ঘটনাটি সবুজ ঘরামীর বাবা সুশীল ঘরামী রীনা রাণী মন্ডলকেও জানান।

এ বিষয় নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ধারাবাশাইল বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর সঙ্গে গণিত শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদারের ভাই অমূল্য রতন হালদারের কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও তার ভাই মনি বাড়ৈ অমূল্যকে মারধর করেন।

শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার বলেন, ‌‘চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ তার ভাই মনিকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে মারপিট করেন। এ পর্যায়ে আমার কপালে তার পায়ের স্যান্ডেল লাগিয়ে বলেন, তুই আমার স্যান্ডেলেরও যোগ্য না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে ও তোর ভাইকে দেখে নেব।’

তবে মারধরের বিষয়টি অভিযোগ করে ইউপি চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ বলেন, ‌‘আমি শিক্ষক অমূল্য হালদারকে মারধর করিনি। অমূল্য হালদার মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিষয়টি নিয়ে আমার মা-বাপ তুলে গালিগালাজ করেছেন। তখন আমার ভাই মনির সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়। অমূল্য রতন হালদার শিক্ষক হলেও খারাপ প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে এলাকার লোকজন কয়েক মাস আগে থানায় জিডি করেছে।’

‘অমূল্য রতন হালদারের ভাই মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার বিদ্যালয়টিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমার স্ত্রী রীনা রাণী মন্ডল এর প্রতিবাদ করায় শিক্ষক দুই ভাই আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে নানা ধরনের মিথ্যা রটাচ্ছেন’, যোগ করেন এই চেয়ারম্যান।

তবে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈরের সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার। এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষকের গায়ে হাত দেওয়াটা দুঃখজনক। তবে উভয়পক্ষই এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর