জাতীয় ফুলে জীবন জীবিকা

জাতীয় ফুল শাপলা। এটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি তরকারী হিসেবে এটি খেতেও সুস্বাধু। বর্ষা মৌসুমে বিস্তীর্ণ জমিতে পানিতে শাপলা জন্মে থাকে। আর এই জাতীয় ফুল শাপলা ই সিরাজদিখানের অনেক মানুষের জীবন ও জীবিকা। সেই শাপলা উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন অনেকে। সিরাজদিখান উপজেলার কয়েক শত পরিবার বর্ষা মৌসুমে শাপলা বিক্রি করে সংসার চালান। সিরাজদিখানের অধিকাংশ কৃষকের প্রধান ফসল আলু। আলু মৌসুম শেষে কৃষকদের হাতে তেমন কোন কাজ থাকে না। তাই তারা বর্ষার অপেক্ষায় থাকেন। আর বর্ষা মৌসুমে অনেক কৃষকই শাপলা বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন। শাপলা বিক্রিতে কোন পুঁজির দরকার হয় না। শুধু মাত্র বর্ষার পানিতে নিমজ্জিত জমি থেকে শাপলা তুলে আনতে হয়। এরপর বিভিন্ন বাজারে গিয়ে বিক্রি করা হয়ে থাকে।

শাপলা ফুল সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে কার্তিক মাস পর্যন্ত পাওয়া যায়। সিরাজদিখান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জমি থেকে শাপলা তোলার জন্য কৃষকরা ভোর থেকেই নেমে পড়েন। নৌকায় করে এ শাপলা তোলা হয়। উপজেলার লতব্দী ইউনিয়ন ও রশুনিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন বিল ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। পরে উপজেলার চোরমর্দন শশ্মান খোলা এলাকার বাজারে শাপলা পাইকারি বিক্রি করতে দেখা যায়।

লতব্দী ইউনিয়নের চর নিমতলার বিল থেকে শাপলা সংগ্রহকারী মো.ওয়াজুদ্দিন মিয়া জানান, এ সময়ে প্রত্যেকে কমপক্ষে ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ মোঠা (৬০ পিছ শাপলায় ১ মোঠা ধরা হয়) সংগ্রহ করতে পারে। পাইকাররা আবার সংগ্রহকারীর কাছ থেকে এসব শাপলা সংগ্রহ করে একত্রে করে। সিরাজদিখানের রশুনিয়া, ইমামগঞ্জ ও তালতলায় শাপলার পাইকারী ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। পাইকাররা এখান থেকে শাপলা ক্রয় করে নিয়ে পরে রাতে ঢাকার পাইকারী বাজারে বিক্রি করে থাকে।

উপজেলার দনিয়া পাড়া গ্রামের পাইকার মোহন মিয়া জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার মোঠা শাপলা ক্রয় করে থাকেন । সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে এক মোঠা শাপলা ১০ টাকা দরে ক্রয় করে। তারপর গাড়ি ভাড়া গড়ে ৩ টাকা, লেবার ১ টাকা, আড়ৎ দাড়ি খরচ ২ টাকাসহ মোট ১৭ থেকে ১৮ টাকা খরচ পড়ে । ঢাকার যাত্রাবাড়ি আড়তে শাপলা বিক্রি করে ২৫ থেকে ২৭ টাকা করে মোঠা।

শাপলা তরকারী হিসাবে খুবই মজাদার একটি খাদ্য। কয়েক বছর যাবত এ ব্যবসাটি এলাকায় বেশ প্রসার লাভ করেছে। এখন অনেকেই শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে সংসার চালাচ্ছেন।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর