ভদ্রতার মুখোশের আড়ালে ভয়ঙ্কর প্রতারনার নায়ক “নয়ন”

প্রথম দেখায় নয়নকে প্রতারক ভাবা খুবই কঠিন একটা বিষয়। নম্র, ভদ্র, মিষ্টিভাষী ও মার্জিত পোষাক সব মিলিয়ে নিতান্তই ভদ্রলোক মনে করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ভদ্রতার মুখোশের আড়ালে রয়েছে এক ভয়ঙ্কর প্রতারনার ছক। তার এই মায়াবি ছলনার প্রতারনা বুঝে উঠার আগেই অনেকে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে।

 

বেগমগঞ্জ থানার রাজুল্লাপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার উল্লার ছেলে গোলাম সারুয়ার নয়ন (৩৮) নামের এই প্রতারক থেকে সবাই সাবধান। চট্টগ্রাম আকবরশাহ্ থানার পশ্চিম ফিরুজশাহ আবাসিক এলাকার ব্যাবসায়ী আনোয়ার হোসেন বাহারের ৬,৩০,৮০০/= (ছয় লক্ষ ত্রিশ হাজার আটশত) টাকা হাওলাত নিয়ে উদাও হয়েগেছে।

 

খুজনিয়ে জানাযায় এলাকার আরো অনেকের সাথেই প্রতারনা করেছে। কারো কাছ থেকে হাওলাত, কারো দোকান বাকি, চাকুরি দেয়ার নাম করে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যে ভাবে আনোয়ার হোসেন বাহার থেকে ৬,৩০,৮০০/= (ছয় লক্ষ ত্রিশ হাজার আটশত) টাকা হাওলাত নিয়ে পালিয়ে গেল নয়ন! পশ্চিম ফিরোজশাহ আবাসিক এলাকায় ফোন-ফ্যাক্সের ব্যাবসা করে বাহার। প্রতারক নয়ন একই এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে থাত। প্রায়ই মোবাইল রিচার্জ করতে বাহারের দোকানে আসত। মাঝে মাঝে বাকিতেও রিচার্জ নিত আবার সময়মতো তা পরিশোধও করে দিত।

 

ধীরে ধীরে বাহারের সাথে বন্ধুত্বে সম্পর্ক গড়ে তোলে। সে বাহারকে চট্টগ্রাম লালখান বাজার ফাইবস্টার হোটেল রেডিসন ব্লোতে চাকুরি করে। আরো কিছুদিন পর মাসের মাঝখানে সমস্যার কথা বলে সামান্য কিছু টাকা ধার নেয় এবং মাস শেষে টাকা পরিশোধ করে দেয়। এভাবে বাহারের সাথে ছোট ছোট লেনদেন করে বিশ্বাসী হয়ে উঠে প্রতারক নয়ন। বাহার বেচালার তাই নয়ন তার ভাড়া বাসায় এক রুম সাবলেট হিসাবে বাহারকে ভাড়া দেয়। এখন একসাথে থাকা ও খাওয়ায় বাহার প্রায় নয়নের পরিবারেরেই হয়ে উঠল। একসাথে বেশ কয়েক মাস থাকার পর হঠাৎ একদিন প্রতারক নয়ন বাহারকে জানায় সে চাকুরি ছেড়েদিয়েছে। আর চাকুরি করবেনা। এখন সে এলাকায় ছোট-খাট একটি দোকান নিয়ে ব্যাবসা করবে।

 

এরই মধ্যে নাকি দোকান দেখে মালিকের সাথে কথা বলেছে। রাতে যখন বাহার বাসায় আসে তখন প্রতারক নয়ন ও তার স্ত্রী ঝড়না বেগম বাহারের রুমে আসে। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই খুব অনুরোধ করে বাহার কিছু টাকা তাদের ঋণ হিসাবে দিতে তা আবার সময়মতো পরিশোধ করে দিবে। টাকা না পেলে দোকানটা রাখতে পারবেনা। দোকানের অগ্রিম অনেক বেশি। দোকানের অগ্রিম দিয়ে হাতে মালামাল আনারমতো তেমন আর টাকা নেই। তাই বাহারকে বার বার অনুরোধ করে। প্রতারক নয়ন ও ঝড়না বেগম বার বার অনুরোধ করায় বাহার ঋণ হিসাবে টাকা দিতে রাজি হয়।

 

এলাকার কয়েক জন স্বাক্ষি নিয়ে প্রতারক নয়ন ও তার স্ত্রী ঝড়না বেগম বাহারের কাছে আসে। প্রতারক নয়ন নগদ ৬,৩০,৮০০ টাকা ননজুডিসিয়াল ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে নির্দিষ্ট সময়ে ফেরত দিবে মর্মে চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করে এবং নগদ ৬,৩০,৮০০/= গ্রহন করে। চুক্তিনাময় ঋণ পরিশোধের উল্লেখিত তারিখ অতিবাহিত হয়েগেলেও প্রতারক নয়ন টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে কোন কথা বলেনা। তাই বাহারের মনে একটু সন্দেহ হয়। দেরি নাকরে নয়ন ও ঝড়না বেগমের কাছে টাকা ফেরত চায়।

 

প্রতারক নয়ন বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে বাহার থেকে আরো সময় চায়। বার বার এভাবে সময় চেয়েও টাকা ফেরত দেয়না। তাই বাহার চুক্তিনামার স্বাক্ষিগণ সহ এলাকার আরো গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক বসে তাতেও কোন লাভ হয়নি। তখন বৈঠকের সবাই বাহারকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেয়। প্রতারক নয়ন বিষয়টি জানতে পেরে ফোনে বাহারকে আইনের আশ্রয় নানিতে বলে এবং আরো সময় চায়। বাহার রাজি নাহওয়ায় প্রতারক নয়ন ক্ষিপ্তহয়ে বাহারকে হত্যার হুমকি দেয়। হুমকির বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে প্রতারক নয়ন পরিবার ও বাসার আসবাবপত্র নিয়ে গত জুনমাসের আনুমানিক ২/৩ তারিখ রাতের আধারে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

 

প্রতারক নয়ন বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানীর একাধিক সিমকার্ড ব্যবহার করত। বাহার এক এক করে সবগুলো সিমে কল দেয় কিন্তু কোনটাতেই সংযোগ পায়না। বাহার বাধ্য হয়ে চুক্তিপত্রে বর্ণিত ঠিকানা ও পরিচয় পত্রের ঠিকানায় গিয়ে দেখে এগুলো ভূয়া ঠিকানা। এই নামে কেউ এখানে থাকেনা বা তাকে কেউ চিনেনা। বাহার নয়নের শশুড়ের নাম জানত আর শশুড়ের গ্রামের নাম বলায় লোকজন বাহারকে নয়নের শশুড় বাড়ি নিয়ে যায়। নয়নের শশুড় বাড়ি থেকে আসল ঠিকানা সংগ্রহ করে বাহার নয়নের বাড়ি যায়। বাড়িতেও নয়নের কোন হদিস নেই।

 

এই নামে কেউ এখানে থাকেনা বা তাকে কেউ চিনেনা। বাহার নয়নের শশুড়ের নাম জানত আর শশুড়ের গ্রামের নাম বলায় লোকজন বাহারকে নয়নের শশুড় বাড়ি নিয়ে যায়। নয়নের শশুড় বাড়ি থেকে আসল ঠিকানা সংগ্রহ করে বাহার নয়নের বাড়ি যায়। বাড়িতেও নয়নের কোন হদিস নেই। বেগমগঞ্জ থানার রাজুল্লাপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার উল্লার ছেলে গোলাম সারুয়ার নয়ন (৩৮) নামের এই প্রতারক থেকে সবাই সাবধান। একে ধরিয়ে দিন। তাকে কোথাও দেখেথাকলে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করুন।

 

মনে রাখবেন আপনার এ সাহায্য হয়তো নতুন কোন সহজ সরল মানুষ নয়নের মতো ভয়ঙ্কর প্রতারকের প্রতারনার হাত থেকে রাক্ষা পাবে।

 

প্রতারক নয়নের সন্ধান দিতে এই নম্বারে কল করুন :০১৮৩৫৩৯৬১৬৭।

 

বার্তাবাজার/এস.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর