ছাগলনাইয়ায় আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, মেয়রের বাড়িতে গুলি

ছাগলনাইয়া পৌরশহরে আওয়ামী লীগের দু-পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌর আওয়ামী লীগের সহসাধারণ সম্পাদক নুরুল হকের বাঁশপাড়ার বাড়িতে ব্যাপক গুলিবর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নয়ন্ত্রনের জন্য বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় সদ্য শপথ নেয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এনামুল হক মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ।

গুলিবর্ষণ ও বাড়িতে হামলার ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে নুহা নামের একটি শিশু ( ১৩ মাস বয়স)। তার হাতে গুলির স্প্রিন্টার লেগেছে বলে অভিযোগ করা হয়। ছোট্ট শিশুটি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

উক্ত সংঘর্ষে মানিক চেয়ারম্যান(৫১) ,ঘোপাল ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক (৫৫), উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোশারপ হোসেন(৪৫) বাঁশপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য একরাম হোসেন(৩৪) ও ছাত্রলীগের কর্মী রুবেলসহ(২৮) কমপক্ষে সাতজন আহত হয় । নেতাকর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদ্য ঘোষিত ঘোপাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত চেয়ারম্যান আজিজুল হক মানিক পৌর শহরের জমাদ্দার বাজারে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে ফুল দিতে আসেন । ওই সময় আওয়ামীলীগ অফিসের বাহিরে ঘোপাল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামীম মেম্বারের সঙ্গে পূর্ব শুত্রুতার জের ধরে নব নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হকের সমর্থক যুবলীগ নেতা বাঁশপাড়া গ্রামের নবীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়।এরপর ধীরে ধীরে তা বড় ধরনের সংঘর্ষে গড়ায়।

এদিকে, শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকে থানায় মামলা হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, দুপক্ষই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ছাগলনাইয়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক জানান, সরকারি সফরে দক্ষিণ কুরিয়ায় থাকা পৌর মেয়র এম মোস্তফার বাড়ি, তার ও তার ভাইয়ের ঘরে গুলিবর্ষণ ও ভাংচুর করা হয়েছে। তার বাড়িতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা ব্যাপক গুলিবর্ষণ করলে অল্পের জন্য তার তের মাসের ভাতিজি নুহা রক্ষা পেয়েছে। ঘটনার পর থেকে গ্রামবাসী ও বাড়ির লোকজন আতঙ্কে রয়েছে। তদন্ত করে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেছেন তিনি।

ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক মজুমদার তার বাঁশপাড়ার বাড়িতে রাতে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে জানান, যেহেতু নিজেদের দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যের ঘটনা, বসে এটি সমাধান করা যেত। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন,বাড়িঘরে হামলা,গুলির ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তবে যা হয়েছে দলের নেতৃবৃন্দ দলের স্বার্থে বসে এ ঘটনার সমাধান করে দিবেন বলে আশাবাদী তিনি। ঘোপাল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিকের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন তাদের নিরাপত্তা দিয়ে সরিয়ে আনতে। তিনি হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলেও দাবি করেছেন ।

এদিকে, হামলায় আহত আজিজুল হক মানিক চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেছেন, ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নেয়ার এক সপ্তাহ পার না হতেই এনামুলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা শুরু হয়েছে। বাড়ি বাজারের পাশে বলে গ্রাম থেকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে দলীয় নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা করা আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে এনামসহ একটি কুচক্রি মহল। পুলিশ প্রশাসন ও দলের নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শণ করে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নজিরবিহীন বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, দেশের আইনানুযায়ী এবং সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জন্য প্রশাসন ও দলের উর্ধ্বতন কৃর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে, ঘোপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঘোপাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিকসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোপালসহ উপজেলার সবর্ত্র নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামছুদ্দিন আহম্মদ বুলু মজুমদার জানিয়েছেন।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর