মাকে উত্যক্ত করায় বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করে ছেলে

নোয়াখালীর চাটখিলের মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কুলশ্রী গ্রামের চা দোকানদার শাহ আলম (৬০) হত্যার ঘটনায় ১২ ঘন্টার মধ্যে এ খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। আলোচিত এ হত্যাকান্ড নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।

জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, কুলশ্রী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আলমের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩৮) ও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাত শান্ত (১৯) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আজ (বৃহস্পতিবার) গ্রেপ্তারকৃত ইয়াছমিন ও শান্ত নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোয়েব উদ্দিন খান ও মুশফিকুল হকের আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ সুপার জানান, নিহত শাহ আলমের মেয়ে শারমিন আক্তার সূত্রে পুলিশ জানতে পারে ওই দিন মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে নিহত শাহ আলমের মোবাইলে একাধিকবার কল আসে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি ঘরের দরজা বাহির থেকে লাগিয়ে দিয়ে চলে যান। পরে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তিনি আর বাড়ীতে ফিরেন নি। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রযুক্তি সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইয়াছমিন আক্তার ও তার ছেলে শান্ত কে ইয়াসমিনের বাবার বাড়ি গ্রেফতার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে খুনের কারণ উল্লেখ করে আলমগীর হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছমিন আক্তার পুলিশকে জানায় নিহত শাহ আলম মোবাইলে ফোন দিয়ে প্রায় তাকে বিরক্ত করত এবং গভীর রাতে বসত ঘরের দরজা জানালায় টোকা দিত। এ বিষয়ে ইয়াছমিনের ছেলে ভিকটিম শাহ আলমকে মুঠোফোনে শাসিয়ে দিলেও শাহ আলম ইয়াছমিনকে উত্যক্ত অব্যাহত রাখে। পরে ইয়াছমিন তাহার ছেলে শান্ত’র সাথে আলাপ করে শাহ আলমকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াছমিন (৪ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক রাত একটার দিকে মোবাইল ফোনে শাহ আলমকে তার বাসায় ডাকে। এ সময় ইয়াছমিনের ছেলে এবং তার বন্ধুরা শাহ আলমের যাওয়ার পথে ওঁৎপেতে থাকে।

ইয়াছমিনের ফোন পেয়ে ভিকটিম শাহ আলম ইয়াছমিনের বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে কুলশ্রী গ্রামের আবুল কালামের দোকানের সামনে আসলে, ইয়াছমিনের ছেলে শান্তও তার বন্ধু শাহ আলমকে আটক করে, দোকান ঘরের পিছনে নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ইয়াছমিনের ছেলে শান্ত ও তার এক বন্ধু মিলে কাঠের টুকরা দিয়ে শাহ আলমের ঘাঁড়ে আঘাত করে। পরে শাহ আলম উপুড় হয়ে পড়ে গেলে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, হত্যার সাথে জড়িত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামি শান্ত’র বন্ধুকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর