মিসরের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েছিলেন ছোট ছেলে আবদুল্লাহ মুরসি।বাবা হারানো শোকেই মারা গেছেন আব্দুল্লাহ।এমনটাই বলছেন তার বড় ভাই।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) কায়রোর একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ২৪ বছর।
মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুর দুই মাস পর হৃদ্রোগে আবদুল্লাহ মুরসি মারা গেলেন।আবদুল্লাহ মুরসি ভাই আহমেদ রয়টার্সকে বলেন, আবদুল্লাহ রাজধানীর কায়রোয় বন্ধুর সঙ্গে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ কাঁপতে থাকেন। এরপরই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এর আগে এ বছরের ১৭ জুন আদালতে শুনানির সময় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মোহাম্মদ মুরসি। রাজধানী কায়রোর পূর্বাঞ্চলীয় নাসার শহরে তাকে দাফন করা হয়।
মুরসির মৃত্যুর পর তার পরিবারের বিভিন্ন বিষয়ে বাইরের লোকদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব ছিল আবদুল্লাহ মুরসির ওপরেই। পরিবারের মুখপাত্র হিসেবেই দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। তার বাবার মৃত্যুর জন্য তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদেরই দায়ী করে আসছিলেন।
টুইটারে নিজের শেষ পোস্টে আবদুল্লাহ বাবা মোহাম্মদ মুরসির জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং প্রয়াত প্রেসিডেন্টের ওপর যে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে, তার বিচার দাবি করেন।
এছাড়া মুরসির বক্তব্যও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন তিনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকবার কারাগারে যেতে হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ আনা হলেও তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
মুরসির সন্তানদের মধ্যে আবদুল্লাহ ছিলেন মিসরীয় সরকারের সবচেয়ে স্পষ্ট সমালোচক। তিনি তার বাবাকে সবক্ষেত্রে সমর্থন করতেন।
মুরসি কারাগারে থাকাকালে তাকে সুরক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন ২৪ বছর বয়সী এই যুবক।
আবদুল্লাহর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মিসরের সাবেক রাজনৈতিক কারাবন্দী মোহাম্মদ সুলতান এক টুইট পোস্টে তার সাহসের তারিফ করেন।
২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মুরসি। এর মাত্র এক বছরের মাথায় সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান তিনি। এরপরই মুরসিসহ তার দল মুসলিম ব্রাদারহুডের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই তাঁরা একাধিক মামলায় এখনো কারাভোগ করছেন। মুরসিকেও জীবনের শেষ দিনগুলো কারাগারেই কাটাতে হয়েছে।
বার্তাবাজার/এএস