ছিনতাই করতে গিয়ে গণধোলাই খেল পুলিশ, ভিডিও ভাইরাল

রাজধানির মতিঝিলে মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবের সামনে এক যুবকের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই করতে গিয়ে গণধোলাই খেলেন আল মামুন (৩৫) নামে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন। এরপর জনতা তাদের আটক করে মতিঝিল থানায় সোর্পদ করেন।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইয়ের সময় তাদের সঙ্গে থাকা মোটর সাইকেলটি জব্দ করেছে পুলিশ। জব্দ হওয়া মোটর সাইকেলটির (ঢাকা মেট্টো ল ২৪-৩৬৯৯) সামনে পুলিশ লেখা রয়েছে।

এদিকে পুলিশ সদস্যের ১০ লাখ টাকা ছিনতাই চেষ্টার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে ভুক্তভোগী ওই যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। এ সময় আটক পুলিশ সদস্যকে পিটুনি দেয় ক্ষুব্ধ জনতা।

এদিকে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় বংশাল থানা পুলিশের কনস্টেবল আল মামুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামির একজনের নাম জিতু, তবে আরেকজন অজ্ঞাতনামা।

এদিন দিবাগত রাত ১টার দিকে মতিঝিল থানায় মামলা করা হয়। ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা নম্বর-৮। মামলার বাদী ছিনতাইয়ের শিকার আবুল কালাম আজাদ।

ভুক্তভোগী যুবক আবুল কালাম জানান, তিনি ব্যবসা করেন। যমুনা ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে ১০ লাখ টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় দুই ব্যক্তি তাকে বলে, ‘আমরা পুলিশ, আমাদের সঙ্গে তোকে যেতে হবে। গাড়িতে ওঠ, তোকে অনেক দিন ধরে খুঁজতেছি।’

আমি বললাম, ‘আমি তো পুলিশের গাড়ি চিনি। এটা তো পুলিশের গাড়ি না।’ তখন তাকে হ্যান্ডকাপ দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে তার মাথা ফেটে যায়।

ঘটনার সময় উপস্থিত পথচারী মাহিন জনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীর মাথা ফেটে যাওয়ার পর পথচারীরা সবাই এসে লোক দুটোকে আটক করে। এরপর মতিঝিল থানায় তাদের সোপর্দ করে। দুজনের মধ্যে একজন নিজেকে পুলিশ বলে জানায়। তার মোটরসাইকেলেও পুলিশ লেখা ছিল।’

মতিঝিল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন মোল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, টাকা ছিনতাইয়ের সময় জনতার রোষানলে পড়া পুলিশ কনস্টেবল মামুন পাওনা টাকা তুলে দেওয়ার কথা বললেও প্রাথমিক তদন্তে এর কোনো সত্যতা মেলেনি। মামুন, জিতুসহ মোট তিনজন ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই টাকার ব্যাগ টান দেয় এবং বাধা দিলে পুলিশের হ্যান্ডকাপ দিয়ে বাদীর মাথায় আঘাত করে।

মনির হোসেন বলেন, মামুন যদি আসলেই পাওনা টাকা তুলে দিতে সেখানে যেত, তাহলে টাকার ব্যাগ নিয়ে থানায় ফিরতো। কিন্তু সেটি না করে তারা টাকা নিয়ে অন্যদিকে পালানোর চেষ্টা করেছে।

মতিঝিল থানা পুলিশের এসআই নুরে আলম বলেন, আল মামুন পুলিশের গাড়িচালক। যখন যে থানায় থাকেন সেই থানার গাড়ি চালান। কিছুদিন হয়েছে তিনি বংশাল থানায় বদলী হয়েছেন। এর আগে তিনি মতিঝিল থানায় তিন বছর চাকরি করেছেন। সেই কারণে হয়ত বংশাল থেকে এসে মতিঝিলে ছিনতাইয়ের সাহস পেয়েছেন।

বংশাল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির বলেন, আল মামুন মঙ্গলবার রাতে ডিউটি করে। তাই দিনে তার বিশ্রাম ছিল। দিনে সে কোথায় ছিল, সে আমাকে কিছু জানায়নি। তিনি ঘটনাটি শুনেছেন বলে জানান।ছিনতাইয়ের এই ঘটনার সঙ্গে যদি তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, আইনগতভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান তিনি।
https://www.facebook.com/nojor24/videos/2394658507309034/

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর