‘ল্যাম্প অব পিস’ পুরস্কার পেলেন ড. ইউনূস

বিশ্বে শান্তি ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখায় নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘ল্যাম্প অব পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করলো পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট স্বার্বভৌম রাষ্ট্র ভ্যাটিকান।

মঙ্গলবার ইটালির আপার প্যাপাল বাসিলিকা অব আসিসি-তে আয়োজিত জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ভ্যাটিকানের পক্ষে অধ্যাপক ইউনূসের হাতে ল্যাম্প অব পিস তুলে দেন হোলি কনভেন্ট এবং প্যাপাল বাসিলিকা অব আসিসির মাস্টার ফাদার মওরো গামবেত্তি।

এসময় ভ্যাটিকানের নেতৃবৃন্দ, রোমের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইটালির ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা। দ্যা হোলি কনভেন্ট অব প্যাপাল বাসিলিকা অব আসিসি’র মুখপাত্র ও পরিচালক ফাদার এনজো ফরতুনাতো গত ২৮ জুন থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ৯ম সামাজিক ব্যবসা দিবসের উদ্বোধনী দিনে পোপ ফ্রান্সিসের প্রতিনিধি হিসেবে ড. ইউনূসকে ল্যাম্প অব পিস পুরস্কারের ঘোষণা দেন।

তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ইউনূসের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এর আগে ১৯৮১ সালে পোলান্ডের প্রখ্যাত ট্রেড ইউনিয়ন নেতা লেস ওয়ালেসাকে প্রথম এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পোপ দ্বিতীয় জন পল, দালাইলামা, কোলকাতার সেইন্ট তেরেসা এবং রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভকে পুরস্কার দেওয়া হয়।

কলম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসকে তাঁর নিজ দেশের গৃহযুদ্ধ বন্ধে অবদানের জন্য ২০১৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের পাশাপাশি এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। সম্প্রতি আরো দু’জনকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

তাঁরা হলেনন জার্মানির প্রেসিডেন্ট অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ও জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। অ্যাঙ্গেলা মার্কেলকে এই পুরস্কার দেওয়া হয় মানুষে-মানুষে সংহতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠায় তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য।

জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহকে মানবাধিকার, আন্তঃধর্ম সংলাপ ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান এবং সংঘাতপূর্ণ সিরিয়া থেকে দেশত্যাগকারী রিফিউজিদেরকে তাঁর দেশে আশ্রয়দানের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।

মঙ্গলবার পুরস্কার গ্রহণের পর ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস মানবজাতির সামনে তিনটি আসন্ন সংকট বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার মতে, সম্পদের প্রবল ও ক্রমাগত কেন্দ্রীকরণ, পরিবেশের দ্রুত বিপর্যয়, এবং আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সের উত্থান।

তিনি এই বিপদগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন যে, এই গুরুতর সংকটগুলো মোকাবেলায় এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারলে পৃথিবীতে মানবজাতির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, ল্যাম্প অব পিস ফ্রান্সিসকান সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা সেইন্ট ফ্রান্সিস অব আসিসির সমাধির পাশে প্রজ্বলিত একটি কাঁচের তৈল প্রদীপের অবিকল প্রতিরূপ বা রেপ্লিকা।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর