কালিহাতীতে আদালতের নোটিশ পেয়ে পৌর মেয়রের কান্ড

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পৌরসভার একটি নতুন রাস্তা বের করাকে কেন্দ্র করে এলেঙ্গার পৌর মেয়র নুর-এ-আলম সিদ্দিকী মাস্তানী দেখালেন।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ এর সামনেই তার উষ্কানিতে স্থানীয় জনগণ মো. আবুবকর সিদ্দিকী এলেঙ্গা হাইস্কুল মোড়স্থ বাড়ির টিনের বেড়া ভাঙচুর চালায়। এ সময় তিনি জনতাকে উদ্দেশ্য করে উত্তেজক বক্তৃতা করেন । ভাঙচুরের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা যায়।

বুধবার সকালে এলেঙ্গা পৌরসভা থেকে আমিন নিয়ে আবুবকর সিদ্দিকী’র বাড়ির সীমানা মাপজোক করার একপর্যায়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

এসময় পৌর মেয়র ও কালিহাতী থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, এলেঙ্গা পৌরসভা গুন্ডামি ও মাস্তানী করার জায়গা নয়। রাত ১টা সময়ও এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে লোকজন অবাধে চলাফেরা করে। দূর থেকে অনেক লোক এলেঙ্গায় এসে বসতবাড়ি স্থাপন করেছেন। এলেঙ্গা শহরে গুন্ডামি করলে তাদেরকে যমুনা নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হবে এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে মেয়রের নামে কারণ দর্শানো মামলা তুলে নেয়া না হলে আবুবকর সিদ্দিকীকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার হুশিয়ারি দেন তিনি।

বক্তৃতার এই পর্যায়ে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে আবুবকর সিদ্দিকীর বাউন্ডারির টিনের বেড়া ভাঙচুর করে। কালিহাতী থানার অনেক পুলিশ সেখানে উপস্থিত থাকলেও ভাঙচুর ঠেকাতে কোন ধরণের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি।

জানাগেছে, এলেঙ্গাস্থ পুরাতন ভূঞাপুর রাস্তা থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সড়ক পর্যন্ত ১০ফুট চওড়া রাস্তা বের করার জন্য এলেঙ্গা পৌরসভা উদ্যোগ গ্রহন করে। কিন্তু ওই নতুন রাস্তা করতে স্থানীয় আব্দুল আলীর ছেলে মো. আবু বকর সিদ্দিকী, মৃত আকবর খানের ছেলে মো. ইয়াছিন আলী খান ও কালিপদ বিশ্বাসের ছেলে অরুণ বিশ্বাসের বসত বাড়ির কিয়দাংশ ভেঙে জায়গা ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। এ লক্ষ্যে এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ নুর-এ-আলম সিদ্দিকী উল্লেখিত ব্যক্তিদেরকে ১০ফুট প্রস্থের নতুন রাস্তার জন্য বসত বাড়ির জায়গা ছেড়ে দিতে গত ২৭ আগস্ট নোটিশ প্রদান করেন।

নোটিশ পেয়ে মো. আবু বকর সিদ্দিকী টাঙ্গাইলের (কালিহাতী থানা) বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে অস্থায়ী ও অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২ সেপ্টেম্বর এলেঙ্গা পৌর মেয়রকে ‘কেন অস্থায়ী ও অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়া হবেনা’ মর্মে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র ক্ষুদ্ধ হয়ে বুধবার(৪ সেপ্টেম্বর) ওই নতুন রাস্তা বের করার জন্য বসত বাড়ি ভেঙে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। বাড়ির বাউন্ডারী ওয়াল, স্থাপনা ও গাছ অপসারনের উদ্যোগ নেয়ায় মো. আবু বকর সিদ্দিকী গংরাও প্রতিহত করার প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মকান্ডে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে জায়গার মালিক মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ভাই নিউজ করে কি হবে। আপনারা তো সবই দেখলেন আমি পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি আমার পরিবারের নিরাপত্তা দেওয়া হোক।
এ প্রসঙ্গে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান আল মামুন বলেন, আমি নিরপেক্ষ লোক। শান্তির লক্ষ্যে যা প্রয়োজন তাই করবো এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটনাটির সুষ্ঠু সমাধান করবো বলে আশাবাদী।

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর