অনুমতি ছাড়া ফেনী নদী থেকে পানি নিয়ে যাচ্ছে ভারত

আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে বাংলাদেশের কোনো ধরনের সম্মতি না নিয়েই ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলন করছে ভারত। সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে অবৈধভাবে ২৬টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎচালিত লো লিফট পাম্প বসিয়ে নদীটি থেকে পানি উত্তোলন করছে দেশটি।

এদিকে নদী থেকে পানি উত্তোলন না করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পানিসম্পদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, ৯ বছর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুম শহরবাসীর খাবার পানি সরবরাহ করার জন্য ফেনী নদী থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি চেয়েছিল দেশটি। এর প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ এক বৈঠকে মানবিক দৃষ্টিকোণে ভারতকে পানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে পানিসম্পদ সচিব পর্যায়ে এ বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত না হওয়ায় সে সিদ্ধান্ত ভারতকে আর জানায়নি বাংলাদেশ।

কিন্তু পরে বাংলাদেশের কোনো ধরনের সম্মতি না নিয়েই পাম্পের মাধ্যমে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে ৩৫ থেকে ৪০ কিউসেক পানি নদী থেকে উত্তোলন করা শুরু করে ভারত।

এর পর যৌথ নদী কমিশনের কারিগরি পর্যায়ের একাধিক বৈঠকে বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলন না করার জন্য এবং সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে অবৈধ স্থাপনা অপসারণে ভারত কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে জানতে চাওয়া হয়।

এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত এলেই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হবে বলে জানায় ভারতের প্রতিনিধি দল।

অনুমতি না নিয়েও বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে ভারতের এ পানি উত্তোলনের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ‘২০১০ সালে ভারতকে পানি দেওয়ার বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে সম্মত হই। কেউ খাবার পানি চাইবে, আমরা সেটি দেব না? এমন অমানবিক বাংলাদেশ নয়। তবে সে সিদ্ধান্ত ভারতকে জানানোর সুযোগ হয়নি। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে চুক্তি এড়িয়ে চলতে পানিসম্পদ সচিব বা মন্ত্রিপর্যায়ে নির্ধারিত বৈঠকে বসেনি ভারত।’

বাংলাদেশের অনুমতি নিয়ে নদী থেকে ভারত এ পানি উত্তোলন করলে ভালো হতো জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, পানি উত্তোলন না করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি অনুরোধপত্র ভারতের সংশ্লিষ্ট জায়গায় পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের মধ্যে ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থল। কিন্তু ভারতের পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে, এ নদীর উৎপত্তি ত্রিপুরা রাজ্যে। অনুসন্ধান ও সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এর উৎপত্তি মাটিরাঙ্গার ভগবানটিলায়। নদীর ১০৮ কিলোমিটারের কোনো অংশ ভারতের নয়।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর