প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে দাবী আদায় করতে চায় ইবির কর্মকর্তারা

প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে দাবী আদায় করতে চায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তারা।

৩ দফা দাবি আদায়ে লাগাতার কর্মবিরতির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয় তারা।

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলা এ আন্দোলনে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর মোর্শেদুর রহমান প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে বলেন,আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে এই গাছের নিচে আমরা আর বসে থাকবো না, আমরা ওই প্রশাসন ভবনের নিচ তালায় বসে আন্দোলন করবো, আপনাদের তিনজনকে অফিসে ঢুকতে দিবো না।আমি জনগনের জন্য রাজনীতি করি, তবে এ কাজ করতে গিয়ে যদি ভিসি কেন তার চেয়ে শক্তিধর কাউকে হুমকি দেয়া লাগলে দিবো।
তিনি বলেন, যারা এই প্রশাসনের দালালি করবেন, তারা কেউ এডিশনাল এবং কেউ ভারপ্রাপ্তও হতে পারবেন না।আপনাদেরকে আমরা প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিবো না।

অভিযোগ রয়েছে যেসকল কর্মকর্তারা আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন না তাদেরকে দাপ্তরিক কাজ কর্মে বাধা দেয়া হচ্ছে।এমনকি নানা হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।

এদিকে কর্মঘণ্টা পরিবর্তন করে ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত করা।চাকরির সময় সীমা ৬২ বছরে উন্নীত করন,উপ-রেজিস্টার পদের বেতন ৫০০০০ এবং সহকারী রেজিস্ট্রার পদে বেতন ৩৫৫০০ করার ৩ দফা দাবীর বিষয়ে,
উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী বলেন,চাকরির বয়স ৬২ বছর করার দাবিটি সিন্ডিকেটে সুপারিশ করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরন করা হয়েছে।
বেতন স্কেলের দাবিটি বাস্তবায়নের জন্য সিন্ডিকেটে গৃহীত হয়েছে এবং নীতিমালা প্রনয়নে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা কর্মঘণ্টা কমানোর ঘোর বিরোধী তাদের মতে কর্মঘণ্টা কমালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতির মুখে পড়বে।এ নিয়ে গত ২ দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, কর্মকর্তাদের কথায় মনে হচ্ছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্কুল বানাতে চায়। উপাচার্য স্যারের কঠোর পরিশ্রমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যখন এক-পা দু-পা করে দ্রুত আন্তর্জাতিকীকরণের পথে এগোচ্ছে সেসময় এসে এধরণের কর্মঘন্টা কমানোর দাবি বড়ই অযৌক্তিক। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের গবেষণার পরিধি কমে যাবে।

অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, উপাচার্য স্যার গতকাল দুটি দাবী মেনে নেয়ার পরও কর্মকর্তারা এধরণের আন্দোলন করছেন। এতে চাপে ফেলে দাবি আদায় করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অথচ এই ভোগান্তির শিকার হচ্ছি আমরা সাধারন শিক্ষার্থীরা।

এবিষয়ে প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন,এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা কোন ভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসন যখন নীতিগতভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেয় সেই সিদ্ধান্তের পরে অপেক্ষা করাটাই শ্রেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন,‘সরকারী নিয়মনীতিকে সমুন্নত রেখে যেকোন যৌক্তিক দাবির প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিক, তবে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা গৃহীত হবে। আমি প্রত্যাশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।’

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর