কুবিতে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের খেসারতে পাহাড় কাটছে প্রশাসন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) অপরিকল্পিতভাবে ভবন নিমার্ণের খেসারত পাহাড় কেটে সেই পাহাড়ের মাটি দিয়ে সড়কের আইল্যান্ড এবং শিক্ষক ডরমেটরির নিচু স্থান ভরাট করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় লাগোয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বধির্তাংশের নির্মাণ কাজ করায় এখন হলের স্যানিটেশন ব্যবস্থা নির্মাণ এবং হলের সাথেই পাহাড়টি যেকোন সময়ে ধসে পড়ার সম্ভাবনা তৈরী হওয়া পাহাড়টি কাটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্য বিঘ্নিত হবে। পাহাড় এবং টিলা কাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা না নিয়েই কাজ করছে প্রশাসন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পশ্চিম পার্শ্বের পাহাড়টি এক্সকাভেটর মেশিনের সাহায্যে মাটি কাটা হচ্ছে। পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন ২০১০ এর ৬ এর ‘খ’ ধারায় আছে কোন পাহাড় বা টিলা কর্তন বা মোচন করা যাইবে না তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজন পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণ ক্রমে পাহাড় কর্তন করা যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশাসনের এমন অপরিকল্পিত কাজের কারণেই পাহাড়টি কেটে তার মাশুল দিতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি হলটি পাহাড় থেকে কয়েক ফিট দূরে সরিয়ে নির্মাণ করতো তাহলে আজতে এভাবে পাহাড়টি কাটা পড়তো না।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের কুমিল্লা শাখার উপ পরিচালক মো: কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমাদের দপ্তর থেকে রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা ব্যতীত পাহাড় কর্তনের ব্যাপারে কোন অনুমতি দেওয়া হয় না, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি পাহাড় কর্তন করে থাকে তবে তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমতি না নিয়ে এ কাজটি করছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা এসে তদন্ত করবো পাহাড়টি কিভাবে কাটা হয়েছে এ ব্যাপারে আপনারা সহযোগীতা করবেন।’

পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেন, ‘ পাহাড়টি বঙ্গবন্ধু হলের সাথেই হওয়ার যেকোন সময়ে হলের উপরে ধসে পড়তে পারে। এছাড়া হলের সাথেই এটি হওয়ায় এর জন্য হলের নিচের তলা গুলোতে সঠিকভাবে আলো বাতাস প্রবেশ করার জন্য এজন্য পাহাড়টিকে কিছুটা হচ্ছে তবে পাহাড়টি পুরোপুরি কাটা হবে না এটি গার্ড ওয়াল দিয়ে সংরক্ষণ করা হবে।’

এভাবে নির্বিচারে পাহাড় কাটার বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক মো: আব্দুল মতিন বলেন, ‘ এভাবে নির্বিচারে পাহাড় কাটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত পাহাড়কে সংরক্ষণ করে স্থাপনা নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা।’

পাহাড় কাটার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী বলেন,‘ পাহাড় কাটার বিষয়ে আমি জানার পর সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছি এবং পাহাড়টি সংরক্ষণ করে পরিবেশ সম্মতভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা প্রদান করেছি।’

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর