গুপ্তচরবৃত্তি করতে বঙ্গোপসাগরে ‘কোবরা বল’,মার্কিনদের অস্বিকার!

ভারতের উপগ্রহ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের (এ-স্যাট) যে দিন উত্‌ক্ষেপণ হয় ঠিক তার পরের দিনই বঙ্গোপসাগরের উপর মার্কিন বিমান ‘কোবরা বল’-কে চক্কর কাটতে দেখা গিয়েছিল।

তার পর থেকেই জোর চর্চা শুরু হয়ে যায়, তা হলে কি ভারতের উপর নজরদারি চালাতে এসেছিল ওই মার্কিন বিমান? যদিও সে সম্ভাবনাকে পুরোপুরিই নস্যাত্ করে দিয়ে পেন্টাগন জানিয়ে দিয়েছে, কোনও গুপ্তচরবৃত্তিই তারা করেনি। তাদের দাবি, ভারতের এই প্রকল্প সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল ছিল। সুতরাং নজরদারি চালানোর কোনও প্রয়োজনই পড়ে না!

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডেভিড ডব্লিউ ওয়েস্টবার্ন বলেন, “ভারতের উপর আমেরিকা কোনও নজরদারিই চালায়নি। ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত। তা সে প্রতিরক্ষা হোক বা অর্থনীতি। সেই সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”

ভারতের উপর নজরদারির চালানোর বিষয়টি যতই অস্বীকার করুন না কেন ইস্টবার্ন, এয়ারক্রাফ্ট স্পটস কিন্তু অন্য কথা বলছে। আকাশে বিভিন্ন সেনাবাহিনীর গতিবিধির উপর নজরদারি চালায় এয়ারক্রাফ্ট স্পটস। তাদের দাবি, মার্কিন বাহিনীর বিমান সে দিন নজরদারিই চালাতে গিয়েছিল।

গত ২৭ মার্চ এ-স্যাট-এর সফল উত্‌ক্ষেপণ করেছিল ভারত। আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের পর চতুর্থ দেশ হিসেবে এই বিরল কৃতিত্ব অর্জন করে ভারত। গোটা বিশ্বের নজর ছিল ভারতের এই উপগ্রহ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের উপর। ২৮ মার্চ বঙ্গোপসাগরের উপর মার্কিন বায়ুসেনার গুপ্তচর বিমান ‘কোবরা বল আরসি-১৩৫এস’-কে চক্কর কাটতে দেখা যায়। এয়ারক্রাফ্ট স্পটস সে সময়ই দাবি করে, এ-স্যাটের কার্যকারিতা পরখ করতেই এসেছিল বিমানটি।

হাভার্ড স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডোয়েল এয়ারক্রাফ্ট স্পটস-এর রিপোর্ট উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানান, আমেরিকা এই বিষয়টিকে পারস্পরিক সহযোগিতা হিসেবে দেখাতে চাইছে ঠিকই, কিন্তু আদৌ কি বিষয়টি সেটা? জোনাথনের দাবি, প্রত্যেক দেশই তার বন্ধু ও শত্রু রাষ্ট্রের উপর নজরদারি চালায়। আজকাল এই ‘পদ্ধতি’তেই কাজ করে আন্তর্জাতিক বিশ্ব। আমেরিকা যদি এখন দাবি করে এ-স্যাটের উত্‌ক্ষেপণ স্থল থেকে শুরু করে এর বিভিন্ন বিবষয়ের উপর তারা নজরদারি চালায়নি, তা হলে এটা খুব আশ্চর্যের বিষয় হবে। ফলে এই তত্ত্বটি আরও জোরদার হবে যে আমেরিকা ভাল ভাবেই জানত ভারত এই ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্‌ক্ষেপণ করতে চলেছে!

অন্য দিকে, এয়ারফোর্স স্পেস কম্যান্ড কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডেভিড ডি থমসন জানান, ভারতে যে এই ক্ষেপণাস্ত্র উত্‌ক্ষেপণ করতে চলেছে সেটা আমেরিকা জানত। ক্ষেপণাস্ত্রটিকে প্রথমে চিহ্নিত করার পর, তার বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এয়ারফোর্স মিসাইল ওয়ার্নিং সিস্টেম এবং বাকলে এএফবি। ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যে আঘাত হানার পরই তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করে জয়েন্ট স্পেস অপারেশন সেন্টার এবং মার্কিন বায়ুসেনার ১৮ স্পেস কন্ট্রোল স্কোয়াড্রন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর