ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করে প্রতারণার ভয়ংকর ফাঁদ

বিভিন্ন ব্যক্তির ভিজিটিং কার্ড থেকে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে চারটি স্তরে প্রতারণার ফাঁদ পেতে চাঁদা আদায় করত একটি চক্র। রাজধানী ও মাদারীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

রবিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
আটক নয়জন হলেন মিন্টু খান, রাকিব খান টিটুল, জামাল শেখ, রবিউল ইসলাম, সোহেল হাওলাদার, শামিম খান, বিল্লাল খান, আব্দুল মোমিন ও রাব্বি হোসেন।

মোবাইলের মাধ্যমে চাঁদা আদায়কারী চক্রটি কয়েকটি স্তরে ভাগ হয়ে কাজ করত বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা। বলেন, ‘প্রথমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করত। কার্ড সংগ্রহের ক্ষেত্রে তাদের টার্গেট ছিল ভিজিটিং কার্ড’ প্রস্তুতকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের টেলিফোন গাইড থেকে নম্বর জোগাড় করত। সেগুলো চক্রের দ্বিতীয় স্তরে থাকাদের কাছে হস্তান্তর করলে তারা ওই ব্যক্তির নাম-ঠিকানা, কর্মস্থল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করত। তার সম্পদের আনুমানিক হিসাব সংগ্রহের পাশাপাশি টার্গেট ব্যক্তির দুর্বল দিকগুলোর তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তৃতীয় সারির সদস্যদের হাতে পৌঁছে দিতো।’

র‌্যাব-৪ অধিনায়ক বলেন, ‘চক্রটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে তৃতীয় স্তরের সদস্যরা। এরা অত্যন্ত ধূর্ত ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে থাকে। তারা বিভিন্ন উপায়ে সংগৃহীত ভিজিটিং কার্ডে উল্লিখিত ব্যক্তি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য যাচাই-বাছাই করার পরে মোবাইলফোনে চাঁদা দাবি করে। টার্গেট ব্যক্তির মনে ভীতির সঞ্চার করে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে নিজেদের বিভিন্ন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামে পরিচয় দেয়।’

‘এছাড়া চাঁদার টাকা না দেওয়া হলে হত্যা বা পরিবারের সদস্য, বাবা-মা অথবা ছেলে-মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়। আর হুমকি দেওয়ার সময়ে যে সিমগুলো ব্যবহার করা হয় তা বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে, ফলে সহজে তাদেরকে ধরা যায় না।’

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চক্রের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় চক্রের কাজ সফলভাবে শেষ করার পরে চতুর্থ স্তরের কাজ শুরু হয়। এ স্তরের কাজ হচ্ছে টাকা সংগ্রহ করা। বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদার টাকা গ্রহণ করে। আবার অনেক সময় সরসারি গিয়েও নগদ টাকা আদায় করে।’

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, চাঁদাবাজ চক্রটি ২০০৬ সাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহের পাশাপাশি বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণা, বিভিন্ন নামি-দামি প্রতিষ্ঠানের লটারি জয়ী হওয়া আবার কখনো জিনের বাদশার পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।

বার্তাবাজার/এম.কে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর