পথশিশুদের নিয়ে সুমাইয়ার স্বপ্নপুরী আনন্দ ইশকুল

নোয়াখালী জেলার বাণীজ্যিক শহর চৌমুহনীতে পথশিশুদের নিয়ে স্বপ্নপুরী আনন্দ ইশকুল নামে একটি অভিনব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্সে অধ্যয়নরতা সুমাইয়া।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ওয়সেকপুর গ্রামের মেয়ে চৌমুহনীতে বাবা মায়ের সাথে বসবাসরতা সুমাইয়া চৌধুরী ২০১৮সালের ৩ জানুয়ারী চৌমুহনী রেল ষ্টেশনে প্রথমে প্লাটফর্মে খোলা আকাশের নীচে ক্লাশ করায় পরবর্তীতে ষ্টেশনের দক্ষি পাশে চোট্ট একটি ঘর ভাড়া নিয়ে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে।

এটি শ্রীঘ্রই দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে ধরা দেবে বলে মনে হয়।যাহা ইতিমধ্যে স্থানীয় জনসাধারণ ও সুধী মহলে সাড়া জাগিয়েছে।উদহারণ সৃষ্টি করেছে সমাজে নৈতিক মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রতকরণে ও যাবতী্য় অবক্ষয় রোধে
শিক্ষায় অনগ্রসর অবহেলীত শ্রেণীর শিক্ষা সচেতন ও জীবনমান উন্নয়নের বিকল্প নেই।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা ও প্রত্যক্ষ করা তথ্য মতে সপ্তাহে শুক্রবার ছুটি ব্যতিত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ক্লাশ চলা স্বপ্নপুরী আনন্দ ইশকুলে বর্তমানে ৬০ জন পথকলী শিশু শিক্ষার্থী নিয়মিত এক আনন্দঘন পরিবেশে শিক্ষার প্রথম পাঠ বর্ণ পরিচয় শিখছে। এ সময় পথকলী শিক্ষার্থীরা শ্রেণী কক্ষে ছড়া কবিতা গান এবং জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা,বিশ্ব সংগীত আমরা করবো জয় পরিবেশন করে শোনায়।

এই মহৎ কাজে অনুপ্রেরণার উৎস জানতে চাওয়া হলে সুমাইয়া চৌধুরী জানায়,ইশকুল প্রতিষ্ঠার পূর্বে সে চৌমুহনী ট্রেন ষ্টেশনে গিয়ে ছিল ভাসমান শিশু ও পরিবার গুলোর জরিপ করতে, এসময় পথকলী কিছু দুষ্ট শিশু এসে ভিড় জমায়,তারা তারকাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে এবংকলম ভেঙ্গে ফেলে,এতে শান্ত মনে সুমাইয়া চিন্তা করে এদের মধ্যে নূনতম শিক্ষা
জ্ঞানের আলো নাথাকায় এই আচরণ।এদের মঝে শিক্ষার আলো জ্বালাতে হবে। সুমাইয়া বিষয়টি তার মায়ের সাথে পরামর্শ করে এবং মায়ের পরামর্শে ও উৎসাহে শিক্ষা দানের উদ্দেশ্যে পথকলী শিশুদের সংগঠিত করে প্রথমে প্লাটফর্মে শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করে।পরে মায়ের দেওয়া ২০ হজার টাকা অগ্রিম দিয়ে উল্লেখিত ঘরটি মাসিক ৩৫০০ টাকায় ভাড়া নিয়ে স্বপ্নপুরীআনন্দ ইশকুল প্রতিষ্ঠার সূচনা করে।

বর্তমানে সে নীজে একাধারে বিদ্যালয়টি পরিচালনা ও প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্বরত। তাকে ইশকুল পরিচালনায় ও সহযোগী শক্ষক হিসেবে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে চৌমুহনী কলেজের অনার্সের আরেক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে সুমাইয়া আরো জনায়, স্বপ্নপুরী আনন্দ ইশকুল পথকলী শিশুদের শিক্ষার বর্ণ পরিচয়ের মধ্যদিয়ে সুচনা স্তর অতিক্রম করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির উপযোগী করে গড়েতোলার শিক্ষাটি দিচ্ছে আপাতত। ভবিষ্যতে সরকারী সহা্য়তার হাতছানী পেলে পথকলীদের নিয়ে পৃথক উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন রয়েছে তার।

গত ২৩ শে আগষ্ট নোয়াখালী ৩ আসনের এম.পি আলহাজ্ব মামুনুর রশিদ কিরণ স্বপ্নপুরী আনন্দ ইশকুল পরিদর্শন করে, তিনি পথকলী শিশুদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের চাহিদার কথা চিন্তা করে আশা দিয়েছেন আগামীতে ইশকুলের রুম ভাড়া তিনি বহন করবেন। এই সময় উপস্থিত ছিলেন, চৌমুহনী সরকারী এস.এ কলেজের ছাএ নেতা মোঃ হুমায়ুন হাজী।

বার্তাবাজার/ডব্লিওএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর