ভিক্ষুকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ডিসির বিরুদ্ধে

কাজির গরু খাতা কলমে আছে, গোয়ালে নেই। এমন অবস্থা এখন ভিক্ষুকমুক্ত জামালপুর ঘোষণায়। ভিক্ষুকমুক্ত কর্মসূচির পুরোটাই ভেস্তে গেছে। এই কর্মসূচির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নারী কেলেঙ্কারিতে আলোচিত সেই ডিসি আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে।

ভিক্ষুকের টাকা আত্মসাৎকারী দুর্নীতিবাজ আহমেদ কবীরের অনিয়ম-দুর্নীতি দুদককে খতিয়ে দেখে বিচারের মুখোমুখি করতে দাবি জানিয়েছেন জামালপুরবাসী। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদও।

জামালপুর জেলায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমুহের অগ্রগতি নিয়ে জামালপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শনিবার অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করা হলেও প্রকৃতপক্ষে ভিক্ষুকমুক্ত হয়নি জামালপুর। সেই আগের অবস্থায় রয়েছে ভিক্ষুকের চিত্র। আমি জামালপুর আসলে পথে-ঘাটে, অফিস-আদালতে এখনো ভিক্ষুকদের আনাগোনা চোখে পড়ে।

সত্যিকার অর্থে জামালপুরকে ভিক্ষুকমুক্ত করার জন্য নবাগত জেলা প্রশাসক এনামুল হককে তাগিদ দেন তিনি। জানা গেছে, ২০১৮ সালে ভিক্ষুকমুক্ত জামালপুর গড়ার কর্মসূচি হাতে নেয় জেলা প্রশাসন।

কর্মসূচি সফলে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ৫০ লাখ, জেলার সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন থেকে ৫০ লাখসহ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ অনুদান নেয়া হয়। অনুদানের টাকায় শুরু হয় ভিক্ষুকমুক্ত জামালপুর কর্মসূচি।

সারা জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ভিক্ষুকের তালিকা করা হয়। তালিকায় প্রকৃত ভিক্ষুকদের নাম উঠেনি বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিছু ভিক্ষুককে ভ্যানগাড়ি, ছাগল ও নগদ অর্থ দেয়া হলেও তা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

শহর ঘুরে অধিকাংশ ভিক্ষুকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলা প্রশাসন থেকে কোনো অনুদান পায়নি তারা। তালিকা করতে তাদের কাছে কেউ যায়নি। আমরা অনুদানও পেলাম না অথচ দোকানপাটে বাসাবাড়িতে ভিক্ষা করতে গেলে দূরদূর করে। ভিক্ষা করতে গেলে বলে ডিসি ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করেছে, তোমরা ভিক্ষা করতে এসেছো কেন? রাস্তায় বের হলেও পুলিশে ধরে।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, ভিক্ষুকমুক্ত জামালপুর কর্মসূচি সমাজসেবা থেকে করা হয়নি। সাবেক ডিসি আহমেদ কবির নিজে এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এই অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই।

জামালপুরের নবাগত জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমুহের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা সভায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর