তামিমের বিচারের দাবিতে নিহত রুপার সহপাঠীদের মানববন্ধন

পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় বখাটের উৎপাত সইতে না পেরে রুকাইয়া রুপা নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।এ সময় রুপার সগপাঠীরা বখাটে তামিমকে গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রুপার স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ওই দিন দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ওই বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও রুপার সহপাঠী তাইফুল, রূপ, কথা, রানী মেঘা, আমিনা আফরোজ প্রমুখ।

আত্মঘাতী রুপা (১৫) উপজেলার ভান্ডারিয়া বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ও পৌর শহরের হোটেল ব্যবসায়ী মোঃ রুহুল আমীন মুন্সির মেয়ে। সে ওই বিদ্যালয়ের কেবিনেটের প্রধান সদস্য।

রুপার বাবা রুহুল মুন্সি জানান, বিগত কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে তার মেয়েকে উত্যক্ত করত একই গ্রামের মঞ্জু খানের ছেলে তামিম খান (১৯)। উত্যক্তকারী তরুণ তাকে প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। কিন্তু এতে রাজি হয়নি রূপা। প্রতিশোধ নিতে রূপার একটি ছবি এডিট করে তা বিভিন্ন ফেসবুক আইডির ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয় বখাটে তামিম।

শুক্রবার বিকেলে রুপা এক সহপাঠীর সাথে প্রাইভেট শেষে বাসায় ফেরার পথে পুনরায় তার পথ আটকে রুপাকে বিরক্ত করতে থাকে তামিম। এ সময় তার সাথে প্রেম না করলে এডিট করা ছবিটি ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। রুপা বাড়িতে ফিরে বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে রুপার বাবাকে জানালে রাতে বাড়ি ফিরে এ বিষয়ে কথা বলবেন বলে তিনি রুপার মাকে জানান ।

রুপার বাবা আরো বলেন, রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে রুপাকে তার ঘরে ডাকতে পাঠালে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পাই। অনেক ডাকাডাকির পরও তার কোনো সাড়া না পাওয়ায় ঘরের দরজা ভেঙে তাকে ঘরের মধ্যে অচেতন অবস্থায় পাই। পরে জানতে পারি রুপা ঘরে থাকা ঘুমের ওষুধসহ বিভিন্ন ধরণের ওষুধ খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েছে।

তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না করে ডাক্তাররা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুপার মৃত্যু হয়।

এদিকে শুক্রবার রাতেই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও, তারা অভিযুক্ত তামিমকে আটক করতে পারেনি।

এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাকসুদুর রহসমান জানান, এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, রুপার পরিবার তার লাশ নিয়ে ব্যাস্ত আছে। তাই তারা এ ব্যাপারে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দেয় নি। তবে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর