সেঁতু রক্ষায় বাঁশ !

নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামে খালের ওপর সেঁতুটির বেহাল দশা। স্থানীয় লোকজন সেঁতুটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কায় সেঁতুর নিচে বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রেখেছেন।

সেঁতুটির পাটাতনের ঢালাই ভেঙ্গেও দুটি বড় গর্ত হয়েছে। অন্তত ১২টি গ্রামের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে বাধ্য হয়ে চলাচল করছেন। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জনস্বার্থে সেঁতুটি দ্রুত পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট দফতরের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২০ বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামে খালের ওপর সেঁতুটি নির্মাণ করে। যে কোনো মুহূর্তে সেঁতুটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্য সেঁতুর নিচে বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।

বিকল্প সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুলিয়া ও হিজলডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হিজলডাঙ্গা ও সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ওই সেঁতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করছেন।

এ ছাড়া সীতারামপুর, দুর্বাজুড়ি, ইচড়বাহা, বাঁশভিটা, হিজলডাঙ্গা, শালিয়ারভিটা, মুলিয়া, পানতিতা, কোড়গ্রাম, বালিয়াডাঙ্গা, বড়েন্দার ও গোয়ালডাঙ্গাসহ আশপাশের গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য ওই সেঁতু ব্যবহার করতে হয়। সেঁতুর ওপর দিয়ে পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, কৃষক ও রোগীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন।

হিজলডাঙ্গা গ্রামে বাংলা পৌষ মাসের শেষদিনে ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয়ভাবে ‘পাগল চাঁদের মেলা’বলে পরিচিত। লোকজ ঐতিহ্যের এ মেলায় দেশ-বিদেশের হাজার হাজার মানুষ যানবাহনসহ ওই সেঁতু ওপর দিয়ে এসে ওই মেলায় অংশ নেয়। ওই সেঁতু ব্যবহার বন্ধ না করলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

মুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য সীতারামপুর গ্রামের বাসিন্দা সুজন গাইন বলেন, ‘কয়েক মাস আগে নিজের ব্যক্তিগত অর্থ দিয়ে সেঁতুটির কিছুটা অংশ সংস্কার করেছিলাম। তাই ভ্যান ও সাইকেল যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়েছে। ১২টি গ্রামের মানুষের জন্য সেঁতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

মুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী জানান, ‘সেঁতুটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিষয়টি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।’

নড়াইল সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি ও নির্বাহী প্রকৌশলী বিধানচন্দ্র সমাদ্দার ওই সেঁতুটি দেখে এসেছি। সেঁতুটি নতুনভাবে নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। এটি অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করা হবে।’

বার্তা বাজার/এস.আর

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর