কাশ্মীরিদের সমর্থনে পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ, মোদিকে কড়া বার্তা

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকে সাড়া দিয়ে কাশ্মীরিদের সমর্থনে ‘কাশ্মীর আওয়ার’ পালন করেছেন পাকিস্তানের বাসিন্দারা। জানা গেছে, আজ শুক্রবার বেলা ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কাশ্মীর আওয়ার পালন করা হয়।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনজীবী এবং সেনাবাহিনীও কাশ্মীর আওয়ার পালন করেছেন। ওই সময় ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে লাল বাতি জ্বলেছে। পাকিস্তানজুড়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ছোট-বড় র‌্যালি করে কাশ্মীরিদের সমর্থন করেছেন।

এছাড়া পাকিস্তানের অনেক নেতা কাশ্মীর আওয়ার পালন করেন। সিন্ধু প্রদেশের গভর্নর ইমরান ইসমাইল, বেলোচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী জ্যাম কামাল খান আলইয়ানি, খায়বার পাখতুংখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী মাহমুদ খান এবং পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বুজদার ওই ইভেন্টে অংশ নেন।

জানা গেছে, সিন্ধু প্রদেশের গভর্নর ইমরান ইসমাইল, পানিসম্পদ মন্ত্রী ফয়সাল ভাওদা এবং পিটিআই এর সীমা জিয়া এবং পাক ক্রিকেটার শহিদ আফ্রিদি করাচিতে কাশ্মীর আওয়ার পালন করেছেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার মানুষ তার সরকারি কার্যালয়ের বাইরে ভিড় জমান। ওই সময় ইমরান খানের কাছের লোকজনও উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তানের পাশাপাশি পাক নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরেও ওই ইভেন্ট পালন করা হয়।

ইমরান খান তার কার্যালয়ের বাইরে জমায়েত জনতার উদ্দেশে বলেন, আজ পাকিস্তানের ছাত্র-শিক্ষক কিংবা দোকানের কর্মচারী থেকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বাইরে বের হয়ে এসেছে। আমরা সবাই এসেছি আমাদের কাশ্মীরিদের সমর্থনে। আমাদের কাশ্মীরিরা একেবারে কঠিন সময় পার করছে।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মতাদর্শে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে ভারত। নাজি পার্টি যেভাবে জার্মানি দখল করেছিল, সেভাবে। আমি মনে করি মুসলমানদের একটি বিষয় ভাবা উচিত, তারা সমান অধিকারের নাগরিক নয়। আজকে সারাবিশ্ব দেখছে যে, কাশ্মীরে কী ঘটছে।

ইমরান খান বলেন, আমি সারাবিশ্বের কাছে জানিয়ে দিয়েছি যে, আজকে যদি ভারতের ফ্যাসিবাদী সরকারের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে বিদেশি নেতারা কথা না বলে; তাহলে তার প্রভাব সারাবিশ্বে পড়বে।

তিনি আরো বলেন, ভারত সরকার যদি আজাদ কাশ্মীরের ব্যাপারে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করে, তাহলে প্রতিটি ইটের বদলে পাটকেল খেতে হবে। মিডিয়ার কথা তো বাদ, ভারত সরকার তাদের বিরোধীদলের নেতাদেরই শ্রীনগরে যেতে দিচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানের মানুষের কাছ থেকে আজকের বার্তা হলো, কাশ্মীরের মানুষজন স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের মানুষ তাদের পাশে আছে।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি বলেন, আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যে, আমার জীবদ্দশায় একটি স্বাধীন কাশ্মীর যেন দেখতে পারি; যেখানে তাদের অধিকার হরণ করা হবে না, তাদের নারীরা ধর্ষণের শিকার হবে না এবং তাদের মানুষ শহীদ হবে না।

আগে থেকেই বলা হয়েছিল, শুক্রবার দুপুর ১২টায় ‘কাশ্মীর আওয়ার’ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্তের কথা। আর এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে মিল রেখে শুক্রবার বিকেলে কাশ্মীরে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত ও পাকিস্তানের দখলে থাকা অংশে কাশ্মীরের জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও ‘কাশ্মীর আওয়ার’ কর্মসূচি পালনের সময় সাইরেনও বাজানোর কথা বলা হয়।

গত বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আসিফ গাফুর বলেন, চিফ অব আর্মি স্টাফ (সিওএএস) জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া প্রতিরক্ষা দিবসের প্রাক্কালে কাশ্মীরে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। প্রতিরক্ষা দিবস পালন করা হবে সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখ।

এর আগে গত সোমবারে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ‘কাশ্মীর আওয়ার’ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করার কথা বলা হয়। তিনি বলেন, কাশ্মীরিদের সংহতি দেখাতেই এ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সূত্র : ডন নিউজ

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর