প্রেমিকার লাশ রেখে পালানো সেই প্রেমিক গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাবিনা ইয়াসমিন (১৭) নামের এক তরুণীর লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়া কথিত সেই প্রেমিক কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে তার বাবা-মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে কামরুল ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগের দিন বিকেলে হাসপাতাল থেকেই আটক হন কামরুলের মা ফিরোজা খাতুন। আজ তাকেও এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

গত মঙ্গলবার প্রতিদিনের ন্যায় গার্মেন্টসে কাজে যান সাবিনা। কিন্তু কাজ শেষে তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেননি। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোথাও না পেয়ে পরের দিন বুধবার মধ্যরাতে ফুলপুর থানা থেকে সাবিনার মৃত্যু সংবাদ পান তার পরিবার।

এ ঘটনার পর মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ এনে সাবিনার বাবা লিয়াকত আলী খাঁ বাদী হয়ে ফুলপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা যায়, গাজীপুরে মাস্টার সেন্ট নামের একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে কাজ করতেন কামরুল ও সাবিনা। সেখানে কাজ করা অবস্থায় তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

প্রেমের সূত্রধরে ইয়াসমিনকে বিয়ের কথা বলে কামরুল তার নিজ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুরের মাটিচাপুর গ্রামে নিয়ে যান। সেখানে গত মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবিনা।

এরপর তাকে ফুলপুরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে সাবিনাকে পাশ্ববর্তী কামরুলের খালার বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে সাবিনা আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে পরে তাকে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত্যুর সংবাদ শুনে সাবিনা ইয়াসমিনের মা ফিরোজা খাতুনকে হাসপাতালে রেখে কামরুল এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং আজ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

সাবিনার বাবা ভ্যানচালক লিয়াকত আলী খাঁ বলেন, ‘সাবিনা ও কামরুলের সম্পর্কের বিষয়টি আমরা কেউ জানি না। আমার ধারণা, মেয়েকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে। ’

সাবিনা গাজীপুরের তেলিপাড়ায় তার মা-বোন ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। প্রতিদিনের ন্যায় গত মঙ্গলবার সকালে সাবিনা গার্মেন্টসে যাওয়ার পরে আর বাসায় ফেরেনি। পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুজির পর বুধবার মধ্যরাতে ফুলপুর থানা থেকে সাবিনার মৃত্যু সংবাদ পান।

এ ঘটনার পর মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ এনে সাবিনার বাবা লিয়াকত আলী খাঁ বাদী হয়ে ফুলপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এর কিছু পরেই পুলিশ প্রেমিকের মা ফিরুজা খাতুনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রেমিক কামরুলসহ অন্যরা পালিয়ে যান। পরে সন্ধ্যার দিকে কামরুল ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী বলেন, ‘মামলার মূল আসামি প্রেমিক কামরুল, তার বাবা আব্দুল বারেক ও মা ফিরোজাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’

বার্তাবাজার/কেএ

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর