শেরপুরে শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের এক কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ

শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করে পুন:নির্বাচনের আদেশ হয়েছে নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনালে। নির্বাচনী আপিলেট ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক যুগ্ম ও জেলা দায়রা জজ মো. কামাল হোসেন এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নমিতা দে গত ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের চুড়ান্ত রায়ে আপীল খারিজ করে নিন্ম আদালতের রায় বহাল রেখে এ আদেশ জারী করেন।

রায়ে নির্বাচন কমিশনকে ওই কেন্দ্রের পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।বাদী পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুবুল আলম রকীব রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নির্বাচনী মামলার ক্ষেত্রে এটি একটি দৃষ্টান্তমুলক রায়।

আদালত ভোট বাতিল করে পুণরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। যা আগে কখনো দেখা যায়নি। এতে নিন্ম আদালতের রায় বহাল রেখে আপিল ‘ডিসমিস’ (খারিজ) করেছে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল।

ফলে নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে চেয়ারম্যান পদে নিন্ম আদালতের পুণ:ভোট গ্রহনের আদেশই বহাল থাকলো।
মামলা ও রায়ের নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ শ্রীবরদী সদর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বিজয়ী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আকরাম হোসেন মন্টু পরাজিত হন। বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিবাদী করে ২০১৬ সালের ২৬ মে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মো. আকরাম হোসেন মন্টু।

মামলায় নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচনে আ. লীগের প্রার্থী আব্দুল হালিমের পক্ষে ভোট ডাকাতি, কারচুপি, বিভিন্ন অনিয়ম ও তাঁর (আকরাম) একজন নির্বাচনী এজেন্টকে অপহরণ করার অভিযোগ করা হয়।

ওই কেন্দ্র ছাড়া অন্য ৮টি কেন্দ্রে আকরাম ৭১৬ ভোটে এগিয়েছিলেন। ওই কেন্দ্রে এক হাজার ৪৫৩ ভোটের মধ্যে এক হাজার ৪২২ ভোট প্রদান দেখানো হয়। ভোটার অনুপস্থিত ছিলেন মাত্র ৩১ জন। আর ভোট প্রদানের হার শতকরা ৯৮ ভাগ।

যা অস্বাভাবিক উল্লেখ করে আদালতে ওই সময়কার ভোটার তালিকা অনুসারে ৫২ জন মৃত ব্যক্তি ছাড়াও নির্বাচনে দায়িত্বের জন্য ভোটের দিন ৭ জন এলাকার বাইরে এবং একজন বিদেশে অবস্থানের কারণে অনুপস্থিত থাকার প্রমাণ আদালতে দাখিল করা হয়। ছিলেণ। অর্থাৎ কারচুপি ও অনিয়মের মাধ্যমে আব্দুল হালিম বিজয়ী হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করে প্রতিকার দাবী করা হয়।

সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ শেষে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেরপুরের জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ মো. শহিদুল ইসলাম ২০১৮ সালের ১২ জুন ওই কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করে পুন:নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়ে আদেশ দেন।

রায়ের বিরুদ্ধে বিবাদী আব্দুল হালিম ওই বছরের ২৬ জুন নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক গত ২২ আগস্ট নিন্ম আদালতের রায় বহাল রেখে আপীল খারিজ করে আদেশ জারী করেন।

নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের মামলার বাদী মো. আকরাম হোসেন মন্টু বলেন, অন্য কেন্দ্রেগুলোতে আমি এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু প্রতিপক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে আমার বিজয় ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করেছে।

যা আদালতের রায়ে প্রমাণ হয়েছে। আশাকরি এবার আমি ন্যয়বিচার পাবো। তিনি জানান, নতুন নির্বাচনে আশাকরি আমারই বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসার শুকুর মাহমুদ মিঞার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আদালতের কোন নির্দেশ আমাদের কাছে আসেনি কিংবা নির্বাচন কমিশন থেকেও আমরা এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা আসেনি।

আদালতের রায়ের কপি পেলে নির্বাচন কমিশন আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বার্তাবাজার/এম.কে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর