রায়গঞ্জে শিক্ষক নেতার পাঠদান না করেই বেতন ভাতা উত্তোলন

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে এক সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে পাঠদান না করে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই বেতন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার ধানগড়া মধ্যেপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির অত্র উপজেলার সাধারণ সম্পাদক বাবুল কুমার দত্ত’র বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠেছে।

এতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রভাবশালী ওই শিক্ষক নেতা নিজের খেয়াল খুশিমতো প্রতিষ্ঠানে আগমন করে শিক্ষক হাজিরা খাতায় শুধু স্বাক্ষর করেই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে চলে যান।

উপজেলার ধানগড়া মধ্যেপাড়া গ্রামে অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ে বুধবার (২৮ আগস্ট) স্কুল চলাকালিন সময়ে সরজমিনে গিয়ে বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ১৩৪ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে পাঠদানে প্রধান শিক্ষিকাসহ মোট ৫ জন শিক্ষক/শিক্ষিকার পদ থাকলেও বাস্তবিক ভাবে পাঠদান করান চার জন শিক্ষক/শিক্ষিকা।

এ সময় ঐ শিক্ষক নেতার কথা জানতে চাইলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা উচ্চস্বরে বলেন,ঐ স্যার তো শুধু হুন্ডা নিয়ে মাঝে মধ্যে আসে আর যায় কোন দিন ক্লাস নেননা।

তাহলে ক্লাস নেয় কে? এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন হেড ম্যাডাম,আরও দুই ম্যাডাম ও আমিনুল স্যার আর বাবুল স্যারের ভাড়াকরা (প্রক্সি শিক্ষক) সুনিল স্যার মাঝে মধ্যে ক্লাস নেয়। বাবুল স্যার কখনও ক্লাস না নিয়ে শুধু স্কুলে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবক বলেন,বাবুল কুমার দত্ত দীর্ঘদিন যাবত মাঝে মধ্যে এসে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে। আর ভূইয়াগাতী এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সুনিল নামক এক ব্যক্তি তার প্রক্সি ক্লাস নেয়।

প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,শিক্ষক বাবুল কুমার দত্ত উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই নিজের ইচ্ছে মতো প্রতিষ্ঠানে আসেন। ক্লাস তো দূরের কথা শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা চলাকালিন সময়েও বিদ্যালয়ে না এসে উপজেলা শিক্ষা অফিস আর চা-স্টলে বসে বিভিন্ন শিক্ষকদের তদবির নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষক নেতা বাবুল কুমার দত্ত এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,নির্বাচনী হাল নাগাদের কাজের জন্য আমি ঠিক ভাবে ক্লাস নিতে পারিনি তাই প্রক্সি শিক্ষক রেখেছি। আর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের কথা এড়িয়ে গিয়ে বলেন,আমার বাড়ি উপজেলার কাছে তাই ওখানে বসে থাকি। প্রতিপক্ষের লোকজন শত্রুতাবশত এমন অভিযোগ করতে পারে।
তবে প্রক্সি শিক্ষক রাখার বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অবগত রয়েছেন বলে জানান।

এদিকে অত্র প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল মাহমুদ ও প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ সেহেলী খাতুন প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,তিনি নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে না পেরেই প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়ান। এতে মাসিক ভাবে তিনি হয়তো ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সম্মানি দিয়ে থাকেন ঐ প্রক্সি শিক্ষককে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিদ্যালয় চলাকালীন অন্য দায়িত্ব পালনের কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর