স্বামীর শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

শেরপুর জেলার সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামে ট্রলি চালক ও মাদক সেবী স্বামী সুমন মিয়ার যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতন সইতে না পেরে কনিকা বেগম (২২) নামে এক সন্তানের জননী স্বামী গৃহে ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। গৃহবধূ কনিকা বেগম পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা শহরের পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা দুদু মিয়ার কন্যা। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী সুমন মিয়া পলাতক রয়েছে।

পুলিশ ও কনিকার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বকশীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাড়া গ্রামের দুদু মিয়ার কন্যা কনিকা বেগমের সাথে শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদের ছেলে সুমন মিয়ার বিগত ৫ বৎসর পূর্বে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুমন মিয়া ও কনিকা বেগমের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। এদিকে মাদক সেবী স্বামী সুমন মিয়া স্ত্রী কনিকা বেগমকে তার পিত্রালয় থেকে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে শারীরিক নির্যাতন চালায়। কনিকা বেগম কয়েকবার তার বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দেয় এবং এতেও থেমে থাকেনি কনিকা বেগমের উপর নির্যাতন। এছাড়াও পাষন্ড স্বামী সুমন মিয়া তাদের একমাত্র কন্যা সন্তানকে রেখে কনিকা বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় বেশ কয়েকবার। তার পরেও কন্যা সন্তানের কথা চিন্তা করে সংসার করার জন্য স্বামী গৃহে বারবার ফিরে আসে। অবশেষে কনিকা বেগম স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে সবার অজান্তে ওই দিন সন্ধ্যায় গলায় উড়না পেচিয়ে স্বামী গৃহে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।

খবর পেয়ে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ রুবেল মিয়া সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল থেকে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কনিকা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করে সূরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ২৮ আগস্ট বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

অপরদিকে কনিকা বেগমের বাবা, মা ও বোন সদর থানায় অভিযোগ করে বলেন, মাদক সেবী সুমন মিয়া যৌতুকের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই কনিকা বেগমের উপর শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল এবং পাষন্ড স্বামী সুমন মিয়া কনিকা বেগমকে হত্যা করেছে এমনটাই অভিযোগ কনিকার বাবা-মা ও আত্মীয় স্বজনের।

এব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাল আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, কনিকা বেগমের আত্মহত্যা না হত্যা এ বিষয়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত ঘটনা জানা যাবে এবং সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ও মামলা গ্রহণ করা হবে। এঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছিল।

বার্তাবাজার/কে.জে.পি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর