মৃত মায়ের সন্তান প্রসব!

পর্তুগালের ২৬ বছর বয়সী এক নারীর শেষকৃত্যের আয়োজন চলছে। কারণ গত ডিসেম্বরেই মারা গেছে তার মস্তিষ্ক। আর এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তার ছেলের নাম রাখা হয়েছে সালভাদর।

ওই মায়ের নাম ক্যাটারিনা সেকুয়েরা, যিনি একজন আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়াবিদ ছিলেন।কিন্তু গত ডিসেম্বরে মারাত্মক অ্যাজমায় আক্রান্ত হবার পর তার মস্তিষ্ক মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

সালভাদরের জন্ম হয়েছে ৩২ সপ্তাহ মাতৃগর্ভে থাকার পর এবং এরপর তাকে শিশু হাসপাতালের পরিচর্যায় রাখা হয়েছে। পর্তুগালে মস্তিষ্ক মৃত ঘোষণার পরেও সন্তান জন্ম দানের এটি দ্বিতীয় ঘটনা।

ক্রীড়াবিদ হিসেবে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সেকুয়েরা। তবে তিনি শিশু বয়স থেকেই অ্যাজমায় ভুগছিলেন।

তিনি যখন ভয়াবহভাবে অ্যাজমায় আক্রান্ত হন তখন তিনি ১৯ সপ্তাহের গর্ভবতী। আর এ অবস্থায় তিনি কোমায় চলে যান। এরপর পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে গত ২৬ ডিসেম্বর তার মস্তিষ্ক মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অর্থাৎ একপ্রকার মৃতই বলা চলে তাকে।

কিন্তু গর্ভের সন্তানকে বাঁচতে চিকিৎসকরা তাকে ভেন্টিলেটরে সংযুক্ত করেন। চিকিৎসকদের উদ্দেশ্য ছিলো অন্তত ৩২ সপ্তাহ পর্যন্ত যেনো অপেক্ষা করা যায়। কিন্তু সেকুয়েরার অবস্থার অবনতি হলে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবারই সিজার করে তার বাচ্চা বের করে নিয়ে আসা হয়।

চিকিৎসকরা বলছেন, কোনো গর্ভবতী নারীর মস্তিষ্ক মরে যাওয়ার পরও তার গর্ভের শিশুটির ৩২ সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে। তাই মাতৃগর্ভে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হাসপাতালের এথিকস কমিটি সেকুয়েরার পরিবারের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। আর শিশুটির বাবাও চেয়েছিলেন কোমায় থাকা স্ত্রীর গর্ভে থাকা তার বাচ্চাটি যেন বেঁচে থাকে।

এ নিয়ে সেকুয়েরার মা বলেন, ‘আমার মেয়ে তো মরেই গেছে। আমি তাকে বিদায় দিয়েছি। কিন্তু শিশুটির পিতা চেয়েছেন বলেই সিজার করে ওর পেট থেকে বাচ্চাটি বের করে আনা হয়েছে।’

শিশুটি এখন মোটামুটি সুস্থ আছে। তবে তার কিছুটা শ্বাসকষ্ট আছে। তাই তাকে আরও তিন সপ্তাহ শিশু হাসপাতালে থাকতে হবে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর