আখাউড়ায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সংঘর্ষে আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী রনির বাড়িঘর ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের মাদককারবারী আল্লাদী বেগম ও রোপসা বেগমের নেতৃত্বে এ ভাংচুর হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, রনির দালান ঘরের উত্তর পাশের জানালা, বেড়ার টিনও ফলজ গাছপালা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। মাদককারবারী টাক্কা হত্যাকাণ্ডের পর আতঙ্কে রনিও তার প্রতিবেশীদের বাড়িঘর তালাবদ্ধ।

এবিষয়ে কল্যানপুরের ফজল হকের স্ত্রী হোসনা বেগম জানান, আব্দুর রৌফের ছেলে সানি মিয়া ও আব্দুর রহমানের মেয়ে রোপসা বেগম ও আল্লাদী বেগমের নেতৃত্বে বাড়িঘর ভাংচুর করে ৮০হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। তাছাড়া আগুন লাগিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে তারা ।

তিনি আরও জানান, বেশ কিছুদিন ধরে উত্তর ইউনিয়নের অন্তর্গত কল্যানপুর গ্রামে চুরি, ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের লোকজন রাতের বেলায় পাহাড়ার ব্যবস্থা করেন। এজন্য টাক্কার মাদক চালান করা অসুবিধা হয়ে পড়ে। প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় টাক্কাকে হাতেনাতে গ্রামের যুবকরা ধরে থানায় সোপর্দ করে। টাক্কা সন্ত্রাসী নিয়ে আমার ছেলে রনিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাউতলী এলাকায় প্রকাশ্যে ও মুঠোফোনে খুন জখমের হুমকি দেয়। হুমকির বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদেরকে জানালে টাক্কা ক্ষিপ্ত হয়ে দলবল নিয়ে রনির ওপর হামলা করে। পরে স্থানীয় লোকজন হামলাকারীদের প্রতিহত করলে টাক্কা আহত হয়।

নিহত টাক্কার মা রোপসা বেগম এবিষয়ে বলেন, আমার ছোট বোন আল্লাদী বেগম রাগের বশবর্তী হয়ে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে রনির বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। রাসেল মেম্বার গ্রামের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতো। রাসেল মেম্বার মাদক কারবারীদের থেকে চাঁদা তুলে মাদক ব্যবসার শেল্টারদাতা হিসেবে কাজ করতো। রাসেল মেম্বারের নেতৃত্বে তার সাঙ্গপাঙ্গরা আমার ছেলেকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাছাড়া টাক্কা কাশেম মেম্বারের পক্ষে নির্বাচনে কাজ করার কারনে রাসেল মেম্বার টাক্কার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।

তবে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুল ইসলাম জানান, টাক্কা হত্যাকাণ্ডের মামলায় ২জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাসেল মেম্বার এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। রনির বাড়িঘর ভাংচুরকারীরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহানের কাছে গিয়ে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে বলে শুনেছি।

উল্লেখ্য যে , গত ১৭ই মার্চ বিকেলে মাদক কারবারী টাক্কার নেতৃত্বে প্রায় ১০-১৫জন যুবক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কল্যানপুরে এসে রনির ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে এসে রনিকে উদ্ধার করে। এসময় উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়। পরে তাদের স্বজনরা আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসে। উন্নত চিকিৎসার জন্য টাক্কাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে নরসিংদীতে মারা যায় সে। পরে এ ঘটনায় গুরুতর আহত রনির মা হোসনা বেগম রোপসা বেগম গংদের বিরুদ্ধে এবং টাক্কা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে রোপসা বেগম বাদী হয়ে রাসেল মেম্বার গংদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

বার্তাবাজার/সা.ই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর