জাবিতে এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি নিয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রারদের ক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রারদের এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতির নতুন নিয়ম নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে কর্মকর্তাদের মধ্যে।

জানা যায়, গত ৯ মার্চ ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত ৩১১ তম সিন্ডিকেট সভায় এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি বিষয়ক পূর্বের নীতিমালা বাতিল করে নতুন নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হয়। এতে এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি পাওয়ার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার অফিসের পাঁচটি শাখা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়।

প্রশানের এমন সিদ্ধান্তে অসন্তোষ বিরাজ করছে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সমমানের কর্মকর্তাদের মাঝে। ক্ষোভ জানিয়ে একাধিক ডেপুটি রেজিস্ট্রার জানান রেজিস্ট্রার অফিসের কয়েকজন নির্দিষ্ট কর্মকর্তাকে সুবিধা দিতেই এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। রেজিস্ট্রার অফিসের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অফিসে ডেপুটি রেজিস্ট্রার সমমানের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতিতে সবারই সমান সুযোগ রাখা দরকার ছিল। সেটি না করে প্রশাসন শুধুমাত্র রেজিস্ট্রার অফিসের অভ্যন্তরীণ পাঁচটি শাখায় কর্মরত ডেপুটি রেজিস্ট্রারদেরই পদোন্নতির ক্ষেত্রে সুযোগ দিয়েছেন। এটি কখনোই কাম্য নয়। সকল অফিসই সমান সুযোগ প্রাপ্য।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত সিন্ডিকেট সভায় আলোচ্যসূচি নং ৭ এর আলোকে অফিসারদের নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালার শেষ অনুচ্ছেদটি বাতিল করে নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা-২০২৩ অনুমোদন দেয়া হয়।

পূর্বের নীতিমালায় বর্ণিত, “কর্মরত ডেপুটি রেজিস্ট্রার/ সমমানের কর্মকর্তাদের মধ্যে জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে ১০% ডেপুটি রেজিস্ট্রার/ সমমানের কর্মকর্তাকে নীতিমালায় বর্ণিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার শর্তপূরণ সাপেক্ষে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/ সমমান পদে পদোন্নতি দেয়া যাবে।”

নতুন নীতিমালা অনুসারে, রেজিস্ট্রার অফিসের প্রশাসন-১ শাখা, প্রশাসন-২ শাখা, টিচিং শাখা, শিক্ষা শাখা এবং উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তি শাখায় ১টি করে মোট ৫ টি পদে নীতিমালায় বর্ণিত শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি দেয়া যাবে। রেজিস্ট্রার অফিসে ব্যতিত অন্য কোন অফিস, বিভাগ ও হলে এডিশনাল রেজিস্ট্রার/ সমমানের পদে কোন কর্মকর্তাকে নিয়োগ/পদোন্নতি না দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কর্মকর্তারা জানান, এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি অনেক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও এডিশনাল রেজিস্ট্রার পদের বেতন কাঠামো সমান হলেও এতে সম্মান জড়িত। তাই এক্ষেত্রে পদোন্নতি হলে যোগ্যতা সম্পন্ন সকল ডেপুটি রেজিস্ট্রারদেরই সমান সুযোগ থাকা দরকার। এতে প্রত্যেকটি অফিসের অন্তর্ভুক্তি থাকা আবশ্যক। কিন্তু সেটি না করে শুধুমাত্র রেজিস্ট্রার অফিসের সুনির্দিষ্ট ৫ টি শাখায় কর্মরত ডেপুটি রেজিস্ট্রারদের এ সুবিধা দিয়ে নীতিমালা তৈরী করার বিষয়টি হতাশাজনক।

এ নীতিমালা অনুযায়ী পদোন্নতি স্হগিত রাখতে ও গ্রহনযোগ্য নীতিমালা তৈরীর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম ও রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সাথে সাক্ষাৎ করেছে ডেপুটি রেজিস্ট্রাররা।

এ বিষয়ে জাবি অফিসার সমিতির সভাপতি আজীম উদ্দীন বলেন, এই নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ববিরোধী। এই নীতিমালা পরিবর্তনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রিভিউ কমিটি ছিলো। তারা আমাদের দাবির সাথে সমন্বয় করে আগের নীতিমালার সাথে কিছু যুক্ত করার কথা ছিলো। কিন্তু রিভিউ কমিটির প্রস্তাবনা অগ্রাহ্য করে সিন্ডিকেটে ভিন্ন রকমের নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। যার কারণে কর্মকর্তারা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামরুজ্জামান কমিটির সদস্য সচিব হওয়ার কারণে তার সুবিধার্থে পিএইচডি ডিগ্রিকে রাখা হয়েছে পদোন্নতির বিধিতে। কিছু অতিরিক্ত বিধি যুক্ত করা হয়েছে যা শুধু তার জন্যেই প্রযোজ্য। যেখানে রেজিস্ট্রারের যোগ্যতা ধরা হয় মাস্টার্স থেকে সেখানে কর্মকর্তাদের যোগ্যতায় পিএইচডি রাখা নিখাঁদ-ই উদ্দ্যেশ্য প্রোনোধিত।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ মিটিং এ থাকায় পরে যোগাযোগ করতে বলেন। এ বিষয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলমের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর