দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ক্ষমতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাদের দাবি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের যে সিন্ডিকেট এতে সরকারই সম্পৃক্ত।
শনিবার (১৮ মার্চ ) দুপুরে পল্টন মোড়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশে নেতারা এ অভিযোগ করেন। বিদ্যুৎ-গ্যাস ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তাদের কোনো কিছু করবার ক্ষমতা নাই। যারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে যে সিন্ডিকেট এই সিন্ডিকেটে-ই ভূত আছে। এই সরকার নিজেই একটা সিন্ডিকেট, ভোট ডাকাতির সিন্ডিকেট, লুটপাটের সিন্ডিকেট, জনগনের উপরে নির্যাতন করবার সিন্ডিকেট। আর তাদের সিন্ডিকেটের শাখা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে অথবা সুবিধা মতো জনগনের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারি করবার জন্যে কতগুলো নিজেদের বন্ধু-বান্ধব, আত্বীয়-স্বজন তাদের মিলিয়ে সমগ্র জনগোষ্ঠিকে ধরে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, আন্দোলনের এই বাতাসটাকে ধীরে ধীরে আরো বাতাস দিতে থাকব, চাঙ্গা করতে থাকব যাতে রোজার পরে আমরা আমাদের পাওনা কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নিতে পারি। আমরা সবার সমর্থন চাই। দেশে-বিদেশে যারা আছেন সবার সমর্থন চাই।
গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন রমজান মাসে গণসংযোগ করা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে আগামী রমজান মাসে আগামী আন্দোলনকে সংগঠিত করার জন্য, বেগবান করার জন্য আমরা জোরদার করার জন্য গণসংযোগ কর্মসূচি, প্রচার-প্রচারনার কর্মসূচি, বৈঠক-কর্মীসভার রাখব। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে আমরা গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেব।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমাদের তিস্তা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার দুইটা খাল কেটে তারা আবার সেখানে পানি প্রত্যাহার করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ ইতোমধ্যে বরাদ্ধ করা হয়েছে। এতোদিন পার হয়ে গেলো যে, সরকার এতোখানি নতজানু এই পর্যন্ত ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটা সাধারণ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।
শুষ্ক মৌসুমে এমনি তিস্তায় পানি থাকে না। প্রধানমন্ত্রী দুইবার ভারত সফর করলেন তিস্তার পানি আনতে পারেন নাই। উল্টো ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারে উনি চুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছেন। এখন শুনেছি ধরলা নদী থেকে ভারত আবার নতুন করে পানি প্রত্যাহার করবে। এরা (সরকার) বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আজ আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার পরিবর্তে তারা ভারতকে তোয়াজ করছে পানির জন্যে। মাঝে মধ্যে দিল্লী-কলকাতাতে বেনারসী শাড়ি পাঠায়, আমের সময় আম পাঠায়, ইলিশ মাছের সময় ইলিশ মাস পাঠায়। আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, এসব করে যে কুটনীতি তা নিয়ে বাংলাদেশ পানি আনতে পারেনি।এর বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে আমরা আমাদের দেশ, আমাদের জনপদ, আমাদের পানি সম্পদসহ কোনো কিছুকে রক্ষা করতে পারব না।
বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেন, আওয়ামী লীগের পান্ডারা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ তছনছ করেছে। সুপ্রিম কোর্ট আর সুপ্রিম কোর্ট নাই। এটা এখন আওয়ামী লীগের দখলে চলে গেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, এই সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধে গড়ে তুলতে হবে।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে এবং ছাত্র লীগ (রব) সভাপতি তৌফিক উজ-জামান পীরাচার সঞ্চালনায় সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বার্তাবাজার/এ.আর